বিশ্লেষণ: যে পাঁচ কারণে হেরেছে ভারত

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে লন্ডন গিয়েছিল ভারতীয় দল। করোনার ধাক্কায় নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ম্যাচটায় খেলতে পারেননি। নিয়মিত অধিনায়কের বদলে জাসপ্রিত বুমরাহ এজবাস্টনে পঞ্চম টেস্টে ভারতকে নেতৃত্ব দেন।

বিশ্লেষণ: যে পাঁচ কারণে হেরেছে ভারত

অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে ম্যাচটিতে সাত উইকেটের বড় ব্যবধানে গেরে গেছে ভারত। অথজ ম্যাচের প্রথম তিনদিনই দাপট দেখিয়েছে সফরকারী দল। শেষ দুই দিনে ম্যাচের লাগাম হারায় বুমরাহ দল। প্রথম ইনিংসে ৪১৬ রান করেছিল ভারত। লিডও পেয়েছিল ১৩২ রানের। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল ২৮৪ রানে। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে সুবিধা করতে পারেনি ভারত, ২৪৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। ইংলিশদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৭৮ রান। জো রুট ও জনি বেয়ারস্টোর সেঞ্চুরিতে বিশাল এই টার্গেট যেন তুড়ি মেরেই পার হয়ে গেল ইংলিশরা।

২০০৭ সালের পর থেকে ইংল্যান্ডে সিরিজ জেতা হয়নি ভারতীয় দলের। এবারের পাঁচ ম্যাচের সিরিজটিও (২-২) ড্র হলো। এজবাস্টনে ভারতের এই হারের পেছনে পাঁচটি কারণ খুঁজে বের করেছে ভারতের শীর্ষ দৈনিক আনন্দবাজার। নিজে তা নিয়েই আলোচনা করা হলো-

এক. প্রথম ইনিংসে ৪১৬ রান করলেও ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা বেশিরভাগই ব্যর্থ ছিলেন। ৯৮ রানে ৫ উইকেট পতনের পর ঋষভ পন্ত এবং রবীন্দ্র জাদেজা জোড়া সেঞ্চুরি করেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে শুভমান গিল ২১, চেতেশ্বর পুজারা ৭৯, হনুমা বিহারি ৩১, বিরাট কোহলি ২১, শ্রেয়াস আইয়ার ৩৪ রান করেন।

দুই. দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মানসিকতা ছিল রক্ষণাত্মক। পুজারা এবং পন্ত ছাড়া কেউ ভালো করেননি। পুজারা ৬৬ এবং পন্ত ৫৭ রান করেন। তাদের বাইরে আর অন্তত একজন ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেললে ভারতকে এই টেস্ট হারতে হতো না।

তিন. প্রথম ইনিংসে ষষ্ঠ উইকেটে পন্ত এবং জাদেজা ২২২ রানের জুটি গড়েন। দ্বিতীয় ইনিংসে পুজারা এবং পন্ত চতুর্থ উইকেটে ৭৮ রান যোগ করেন। এর বাইরে দুই ইনিংস মিলিয়ে ভারত আর একটিও ৫০ রানের জুটি গড়তে পারেনি। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৬৬ ও ৯২ রানের দুটি জুটি ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড ওপেনিং জুটিতে ১০৭ রান তুলেছিল। এরপর চতুর্থ উইকেটে জো রুট এবং জনি বেয়ারস্টো ২৬৯ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন থাকেন। যা ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়।

চার. ভারতের বোলাররাও সুবিধা করতে পারেনি। বিশেষ করে পেসারদের মধ্যে মোহাম্মদ শামি ও শার্দুল ঠাকুর ব্যর্থ ছিলেন। বুমরাহ, সিরাজই কিছুটা হুমকি হতে পেরেছিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের জন্য। বিশেষ করে শার্দুল ঠাকুরের নিষ্প্রভতা ভুগিয়েছে ভারতকে। ভালো স্পিনারের অভাবও বোধ করেছে ভারত। বাঁহাতি এই স্পিনার একটি উইকেটও পাননি।

পাঁচ. ম্যাচের শেষ দিনে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১১৯ রান। ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল ভারতীয় বোলারদেরও। রুট, বেয়ারস্টোর জুটি ভাঙতে পারলেই হয়তো লড়াই জমে যেত। কিন্তু দিনের শুরু থেকেই ভারতীয় দলের মানসিকতা ইতিবাচক ছিল না। রুট-বেয়ারস্টোর জুটির সামনে হতোদ্যম হয়ে পড়ে ভারতীয় ক্রিকেটাররা। হাল ছেড়ে দিয়েছিল দলটা। সঙ্গে চতুর্থ দিনে দুটি ক্যাচও ফেলেছিল ভারত।

করোনার কারণে ২০২১ সালে পাঁচ ম্যাচ টেস্ট সিরিজের চারটি খেলেই দেশে ফিরে আসে ভারত। ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ভারত। একবছর পর সিরিজের পাঁচ নম্বর টেস্টটি খেলতে আসে ভারত।