বাংলার 'ফাটাকেস্ট' ওবায়দুল কাদেরের রাজনৈতিক জীবন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত তিনিই হলেন তার স্বপ্নের দলের সাধারণ সম্পাদক। তার বিভিন্ন সাহসী পদক্ষেপ আর কুচপরোয়া ভাব নিয়ে জনকল্যানমূলক কাজের জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেকেই তাকে বাংলার 'ফাটাকেস্ট' বলে অভিহিত করেন। সেই ফাটাকেস্টকেই দলের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পৈত্রিক নিবাস নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বড় রাজাপুর গ্রামে। ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোশাররফ হোসেন। ওবায়দুল কাদেরের মা ফজিলাতুন্নেসা। তিনি প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন বসুরহাট সরকারি এএইচসি হাইস্কুল থেকে। পরে নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সফলতার সঙ্গে স্নাতক পাশ করেন। ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীর নাম ইসরাতুন্নেসা, পেশায় তিনি আইনজীবী।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এমন সময় মন্ত্রীত্ব পান যখন পদ্মা সেতু 'দুর্নীতি' নিয়ে বিব্রত বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ। পরে তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। প্রতি পদে পদেই তিনি হয়েছেন সফল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত এই নেতাকে শেখ হাসিনা নিজেই পুরস্কৃত করলেন।

মেধাবী শিক্ষার্থী ওবায়দুল কাদের কলেজ পড়াকালীন থেকেই জড়িয়ে পড়েন ছাত্র রাজনীতিতে। ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সক্রিয় সৈনিক। ১৯৬৯-এও তিনি ছিলেন সরব। ওবায়দুল কাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মুজিব বাহিনীর কোম্পানীগঞ্জ থানার কমান্ডার ছিলেন। পরে ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর কারা অন্তরীণ করা হয় তাকে। আড়াই বছরের ওই কারাবাসের সময়েই তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। যোগ্য নেতৃত্বের জন্য পরপর দুইবার তিনি এই পদে আসীন ছিলেন।

তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালে। সেবারই তিনি যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে ২০০২ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দলের জন্য কাজ করেন। তিনি ২০০৭ সালের ৯ মার্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে গ্রেপ্তার হয়ে ১৭ মাস ২৬ দিন কারাগারে ছিলেন। ২০১১ সালের শেষ দিকে ওবায়দুল কাদের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের ১২ই আবারো যোগাযোগমন্ত্রী হন তিনি। তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী থেকে তিনি তিন তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

রাজনীতির পাশাপাশি লেখালেখিতেও ওবায়দুল কাদের সমানভাবে সমাদৃত। তিনি এক সময়ের জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা বাংলার বাণীতে সহকারী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

প্রধানমন্ত্রীর দেখা পাননি সেই নৌকাপ্রেমী সিদ্দিক মিয়া

আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্র সংশোধন

আ'লীগের সম্মেলনে শিবিরকর্মী আটক

জয়: বিদেশে থেকে পদে থাকা ঠিক না

শেখ হাসিনা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের