মালদ্বীপে পালালেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া

অবশেষে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। পদত্যাগ না করেই আজ বুধবার ভোরে তিনি প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপে পালিয়েছেন। কয়েক মাস বিক্ষোভের পর দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হলেন ৭৩ বছর বয়সী এই নেতা। সঙ্গে ছিল তার স্ত্রী এবং দুই দেহরক্ষী। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

গোতাবায়া রাজাপাকসে

শ্রীলঙ্কা থেকে একটি সামরিক আন্তোনোভ-৩২ বিমানে মালদ্বীপে নামেন গোতাবায়া। এসময় পুলিশ প্রহরায় তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বুধবার ভোরে মালে বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

শ্রীলঙ্কার এক অভিবাসন কর্মকর্তা বলেন, তাদের পাসপোর্টে স্ট্যাম্প লাগানো ছিল এবং তারা বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে উঠেছিলেন। এক সময়ের ‘দ্য টার্মিনেটর’ নামে পরিচিত এই নেতা দেশত্যাগের সময় ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিমানবন্দরে অভিবাসনকর্মীদের সাথে একটি অপমানজনক পরিস্থিতির মধ্যে আটকে ছিলেন।

খবরে বলা হচ্ছে, গোতাবায়া একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দুবাই যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মীরা তাকে ভিআইপি মর্যাদা দিতে চায়নি। তারা তাকে সাধারণ যাত্রীদের পাবলিক কাউন্টার দিয়ে যেতে বাধ্য করেন।

প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক দলের নেতারা জনসাধারণের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার ভয়ে বিমানবন্দরের নিয়মিত চ্যানেলের মাধ্যমে যেতে অনিচ্ছুক ছিল। একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, এসব ঝামেলার কারণে গত সোমবার চারটি ফ্লাইট মিস হয়ে যায়। এসব ফ্লাইটের যাত্রীদের গন্তব্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত।

এদিকে নিকটতম প্রতিবেশী ভারতে ঢুকতে পারেননি গোতাবায়া। কারণ ভারতে অবতরণ করার জন্য সামরিক ফ্লাইটের কোনো ক্লিয়ারেন্স ছিল না। একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, গতকাল মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ও তার সাথে থাকা দলটি সমুদ্রপথে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নৌ ঘাঁটিতে চলে যান। পরে সেখান থেকে সামরিক বিমানে পালিয়ে যান।

শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার জন্য গোতাবায়া দায়ী বলে বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ তুলে আসছে। দেশটিতে এখন বৈদেশিক রিজার্ভ শূন্য হয়ে গেছে। এতে ২ কোটি ২০ জনসংখ্যার দেশটিতে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।

গোতাবায়ার পদত্যাগ কার্যকর হলেই প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হয়ে যাবেন। প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের নভেম্বরে। গত এপ্রিল মাসে শ্রীলঙ্কা ৫১ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ খেলাপি হয়েছে এবং দেউলিয়াত্ব ঘোচাতে আইএমএফের সাথে আলোচনা করেছে। গোতাবায়ার ছোট ভাই বাসিল গত এপ্রিলে অর্থমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করেছেন। শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি তার রয়েছে মার্কিন নাগরিকত্বও।