জেলেনস্কি: শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী রাশিয়া

অর্থনৈতিকভাবে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে খাবার, ওষুধ, জ্বালানি সবকিছুতেই হাহাকার। তার সাথে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। মন্ত্রিসভার পতন, প্রেসিডেন্টের পালিয়ে যাওয়াসহ সবমিলিয়ে শ্রীলঙ্কাজুড়ে অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশটির এমন বিপর্যয়ের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি

গত বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত এশিয়ান লিডারশিপ কনফারেন্সে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হন জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেন, ইউক্রেনে হামলার মাধ্যমে রাশিয়া বৈশ্বিক খাদ্য সঙ্কট বাড়িয়ে তুলেছে এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতে বড় ধরনের অবদান রেখেছে। তাদের জন্যই পুরো বিশ্বে খাদ্য ও জ্বালানির যোগান বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক হারে। এর জন্য ভুগতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোকে। কেউ জানে না এটি কবে এবং কীভাবে শেষ হবে।

অবশ্য সম্প্রতি ইউক্রেনের বন্দর থেকে শস্য রপ্তানিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে মস্কো। মাস তিনেক ধরে অবরোধ চলার পর রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল বুধবার ইস্তাম্বুলে একটি বৈঠকে শস্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ইতিবাচক মত দেয়। বৈঠকে জাতিসংঘ ও তুর্কি কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

শ্রীলঙ্কাজুড়ে এখন চরম অস্থিতিশীলতা

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্ব বাজারে রপ্তানির জন্য ২ কোটি মেট্রিক টন শস্য এখনও ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে আটকে আছে। স্বাভাবিক সময়ে ইউক্রেন তার রপ্তানির ৫০ শতাংশের বেশি ওডেসার বৃহত্তম ব্ল্যাক সি বন্দরের মাধ্যমে পাঠাতো। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রুশ অবরোধের কারণে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়।

সদ্য প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানা গেছে, ইউক্রেনে রুশ হামলার জেরে খাদ্য, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কোনো না কোনো ধরনের সংকটের মুখে পড়েছে ৯৪টি দেশের ১৬০ কোটি মানুষ। খাদ্য-জ্বালানির অভাবে চরম দুর্দশা দেখা দিয়েছে আরও ১২০ কোটি মানুষের জীবনে। সবমিলিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধের ফলে ধাক্কা খেয়েছে গোটা বিশ্ব।

এদিকে জেলেনস্কি রাশিয়াকে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির জন্য দায়ী করলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের অব্যবস্থাপনা, স্বজনপ্রীতি, জবাবদিহিতার অভাব ইত্যাদি কারণে ভেতরে ভেতরে দেশটির অর্থনৈতিক সঙ্কট ঘনীভূত হয়েছে। এর জেরে নীরবে ফুরিয়ে গেছে বৈদেশিক রিজার্ভ। এমনকি রান্নার গ্যাস, গাড়ির জ্বালানির পাশাপাশি খাদ্য ও ওষুধ আমদানির জন্য যথেষ্ট অর্থও সরকারি কোষাগারে নেই। ফলে দ্বীপরাষ্ট্রটি অস্থিতিশীল সময় পার করছে।