সিঙ্গাপুরে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছেন গোতাবায়া, ফিরবেন শ্রীলঙ্কাতেই

অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় গণবিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। এখন দেশটিতে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন তারই ঘনিষ্ঠ রনিল বিক্রমাসিংহে। এই সুযোগে দেশে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন গোতাবায়া। তবে ঠিক কবে ফিরবেন, তা জানা যায়নি। খবর বিবিসি।

গোতাবায়া রাজাপাকসে

আজ বুধবার সিঙ্গাপুরের স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরে থাকার জন্য গোতাবায়ার ভিসার ১৪ দিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৮ জুলাই। এ অবস্থায় সেখানে আরও ১৪ দিন অবস্থান করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন গোতাবায়া। সেই আবেদন মঞ্জুরও হয়েছে বলে জানা গেছে।

শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার মুখপাত্র বন্দুলা গুনাবর্ধনে গতকাল মঙ্গলবার জানান, আশা করা হচ্ছে সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরবেন। যেহেতু গোতাবায়ার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নেই, তাই তার দেশে ফেরায় কোনো সমস্যা নেই বলে মনে করেন গোতাবায়ার দলের এই এমপি।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাজাপাকসে আত্মগোপনে ছিলেন না। তবে তার দেশে ফেরার তারিখ আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না।

গণআন্দোলনের একপর্যায়ে গত ৯ জুলাই হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে পড়েন। এর আগেই অজ্ঞাতে চলে যান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। ১৩ জুলাই জানা যায়, প্রেসিডেন্ট তার পরিবারসহ বন্দরনায়েক বিমানবন্দরে রয়েছেন, তারা দুবাই চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা তাকে দেশ ছাড়তে না দেওয়ায় সামরিক ঘাঁটিতে আশ্রয় নেন গোতাবায়া।

পরদিন জানা যায়, গোপনে মালদ্বীপে চলে গেছেন গোতাবায়া। তবে রাজধানী মালেতে প্রবাসী লঙ্কানদের বিক্ষোভের মুখে সেখান থেকে ওইদিনই সিঙ্গাপুরে যান গোতাবায়া। এরপর ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন তিনি।

এদিকে সিঙ্গাপুরে আশ্রয় নেওয়ায় সমালোচনার মুখে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, গোতাবায়া সিঙ্গাপুরে থাকার জন্য কোনো রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি। ব্যক্তিগত ভ্রমণ সাপেক্ষে তিনি দেশটিতে ১৪ দিন থাকার সুযোগ পাবেন।

দেশ থেকে পালানোর সময় সঙ্গে তার স্ত্রী এবং দুই দেহরক্ষী ছিলেন। সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর গুঞ্জন ছিল, তিনি হয়তো সেখান থেকে আরব আমিরাতে চলে যেতে পারেন। তবে এরইমধ্যে শ্রীলংকার এমপি জানালেন, দেশেই ফিরে আসবেন গোতাবায়া।

এদিকে, গত শনিবার সিঙ্গাপুরে গোতাবায়ার নামে মামলা করেছে আন্তর্জাতিক অধিকার সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (আইটিজেপি)। শ্রীলঙ্কায় তামিলবিরোধী কয়েক দশকের গৃহযুদ্ধে ‘বিতর্কিত’ ভূমিকার জন্য তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি। ওই সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন গোতাবায়া।