বিক্রমাসিংহে: কঠিন সময়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছি, ধৈর্য ধরুন

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময়ে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এখন তার সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হল দেশের অসুস্থ অর্থনীতিকে ঠিক করা এবং জ্বালানির তীব্র ঘাটতির অবসান করা। খবর দ্য হিন্দু।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে

গত বুধবার দলীয় এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে নব-নির্বাচিত এই প্রেসিডেন্ট বলেন, তার সরকার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে নয়। বিক্ষোভকারীরা যদি আইন না ভাঙে তাহলে সবসময়ই তাদের প্রতিবাদ করার অনুমতি দেওয়া হবে।

সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তে দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন উল্লেখ করে রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, এখন আমাদের অর্থনীতিকে সঠিকভাবে সেট করতে হবে। এর জন্য প্রথম কাজ হবে জ্বালানির জন্য অপেক্ষমান দীর্ঘ সারিগুলোর দৈর্ঘ্য হ্রাস করা এবং এক পর্যায়ে সেগুলো পুরোপুরি নির্মূল করা।

শ্রীলঙ্কার একটি পেট্রোলপাম্পে তেলের জন্য দীর্ঘ লাইন

শ্রীলঙ্কা সরকার গত ২৭ জুন থেকে জ্বালানি সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো সীমিত করেছে।

গত সোমবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেছিলেন, বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র ঘাটতির কারণে শ্রীলঙ্কা আগামী ১২ মাসের জন্য জ্বালানি আমদানি সীমিত করবে। সেই সাথে দেশজুড়ে জ্বালানি বিতরণে একটি রেশনিং ব্যবস্থার ঘোষণা দেন তিনি।

২২ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতার পর থেকে অভূতপূর্ব এক অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দিন পার করছে। দেশটির লক্ষ লক্ষ মানুষ খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে সংগ্রাম করছে। তীব্র বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে দেশটি। এর ফলে জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানিতে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।

জ্বালানি স্টেশনগুলোতে এ পর্যন্ত সহিংসতার অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। সেখানে জ্বালানির জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে এ পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে শ্রীলঙ্কা কয়েক মাস ধরে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারছে না। গত কিছুদিন জ্বালানি তেলের জন্য দেশটি ভারতীয় ক্রেডিট লাইনের উপর নির্ভর করছিল। সেই সুবিধাটিও শেষ হয়েছে। ভারতীয় ক্রেডিট লাইনের অধীনে শেষ জ্বালানি চালানটি ১৬ জুন দেশটিতে পৌঁছেছিল। এরপর এখন পর্যন্ত দেশটি কোনো জ্বালানির ব্যবস্থা করতে পারেনি।