হুথুরু বনাম ডমিঙ্গো: টের পাচ্ছে বিসিবি!

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশের পায়ের তলার মাটি আলগা হয়ে আছে শুরু থেকেই। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে কয়েক মাস আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে সিরিজ হারালেও বাস্তবতা টের পাওয়া গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিশ্বকাপে। সব মিলিয়ে এই সংস্করণে সবশেষ ১৯ ম্যাচের ১৫টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ।

রাসেল ডমিঙ্গোর নেতৃত্বে টাইগাররা যে ধাচের ক্রিকেট খেলছে তাতে হতাশ হয়েছে বোর্ড

বাংলাদেশ দলে পাওয়ার হিটার নেই বললেই চলে। এই সংস্করণে নিজস্ব কোনো ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যও নেই টাইগারদের। পরিবর্তনশীল ক্রিকেটে যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেটটা খেলা দরকার এর ধারেকাছেও নেই দল। বর্তমান কোচরা অবশ্য চেষ্টা করছেন। তাদের আন্তরিকতারও কোনো ঘাটতি দেখছেন না বিসিবি কর্তারা। সমস্যা হচ্ছে কোচদের দৃষ্টিভঙ্গি।

জিম্বাবুয়ে সফরে দুই সিরিজে বিপর্যয়ের পর নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। রাসেল ডমিঙ্গোর নেতৃত্বে টাইগাররা যে ধাচের ক্রিকেট খেলছে তাতে হতাশ হয়েছে বোর্ড। দলের খেলায় পরিবর্তন চায় বিসিবি। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেটে খেলেছে বাংলাদেশ, ডমিঙ্গোর অধীনেও তেমনটি চাচ্ছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ প্রশাসন।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে

এ নিয়ে সোমবার সংবাদমাধ্যমকে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘কোচি স্টাফরা খুব নিবেদিত প্রাণ। কিন্তু তাদের কোচিংয়ের ধরনটা আলাদা। কিছু কোচ আছেন আক্রমণাত্মক কিছু কোচ আক্রমণাত্মক নন। আপনি হাথুরুসিংহের (২০১৪-১৭) কথাই ধরুন। তার মধ্যে আক্রমণাত্মক ব্যাপারটি ছিল, যেমনটা আমরা চাই। আমাদের কোচ (রাসেল ডমিঙ্গো) খুব জ্ঞানী একজন কোচ, কিন্তু আক্রমণাত্মক নন, আমরা আগ্রাসন চাই।’

বাংলাদেশ দলের দুরাবস্থার সময় পুরোনো লঙ্কান কোচকে মনে পড়ছে বিসিবি। বোর্ড পরিচালক ও দেশের ক্রিকেটের কর্তা জালাল তাই বললেন, ‘আমরা চান্দিকাকে (হাথুরুসিংহে) দেখেছি কীভাবে তিনি খেলোয়াড়দের সঠিকভাবে অনুপ্রাণিত করতেন। তাদের (ক্রিকেটারদের) বলতেন, মাঠে কীভাবে আক্রমণাত্মক থাকবে হবে। আমার মনে হয় এখানে (ডমিঙ্গো এবং হাথুরুর কোচিংয়ে) অনেকটা পার্থক্য আছে। আমরা এমন একজনকে চাই যারা আমাদের ধীরগতি থেকে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলাতে পারবে।’

এবারের জিম্বাবুয়ে সফরটা দুঃস্বপ্ন উপহার দিয়েছে বাংলাদেশকে। ক্রিকেটারদের চোখেমুখে হতাশার ছাপটা পরিষ্কার

এ মাসের শেষ দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ খেলতে যাবে বাংলাদেশ। এরপর অক্টোবরে আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। দুই টুর্নামেন্টের মাঝের সময়টায় নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। টাইগারদের পরবর্তী টুর্নামেন্ট আগামী বছর। যেখানে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। গুরুত্বপূর্ণ এসব সূচিকে সামনে রেখে নতুন একটা শুরু করতে হবে বাংলাদেশকে। বিসিবির চাওয়া, হাথুরুর মতোই ‘ব্র্যান্ডিং কিংবা ডরভয়হীন’ ক্রিকেট খেলবে টাইগাররা।