বাড়ছে জ্বালানি সংকট, মন্দার শঙ্কায় জার্মানি

জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক (বুন্দেস ব্যাংক) এক সতর্কবার্তায় বলেছে, জ্বালানি সংকট বাড়তে থাকলে মন্দার মুখে পড়তে পারে জার্মানি। গত শনিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে জার্মান দৈনিক রাইনিশে পোস্টকে এ কথা বলেছেন ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী জোয়াকিম নাগেল। খবর ব্লুমবার্গ।

বুন্দেস ব্যাংক

জোয়াকিম নাগেল বলেন, যদি জ্বালানি সংকট আরও তীব্র হয়, তাহলে আগামী শীতকালে মন্দার আশঙ্কা রয়েছে। অবশ্য বছরের প্রথমার্ধের কঠিন পরিস্থিতিতে জার্মান অর্থনীতি এখন পর্যন্তও বেশ ভালো পারফর্ম করেছে। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে পানির স্তর কমে যাওয়া, জ্বালানির বর্ধিত চাহিদা পূরণে সমস্যা- ইত্যাদি বিষয় আসন্ন শীতে জার্মানিকে বিপদে ফেলতে পারে। সেক্ষেত্রে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে জার্মানির অর্থনৈতিক সমস্যা তীব্রতর হতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী এ সময় বলেন, শরতে জার্মানির মুদ্রাস্ফীতির হার ১০ শতাংশে গিয়ে পৌঁছতে পারে। আর সেটি হলে ৭০ বছরেরও বেশি আগের রেকর্ড স্পর্শ করা হবে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের পরবর্তী সুদের হারের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্যই সুদের হার আরো বাড়াতে হবে।

জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা করছে জার্মানি

এদিকে জার্মানির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক গতকাল রোববার গ্যাস সংরক্ষণের জন্য দেশের অবশিষ্ট তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আয়ু বাড়ানোর কথা নাকচ করে দিয়েছেন। বলেছেন, এগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহারের সর্বাধিক ২ শতাংশ সাশ্রয় হতে পারে।

২০১১ সালের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিপর্যয়ের পর জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ২০২২ সালের শেষ নাগাদ পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার বন্ধ করার জন্য আইন প্রণয়নের সূচনা করেছিলেন এবং বেশিরভাগ মানুষই এ সিদ্ধান্তের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে রাশিয়ান গ্যাস সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় আগের সেই মনোভাবে পরিবর্তন এসেছে।

পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পুনরায় চালুর পক্ষে থাকা ব্যক্তিরা বলছেন, জ্বালানি সমস্যা মোকাবেলায় কয়লা কেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু করার চেয়ে সীমিত সময়ের জন্য পারমাণবিক প্ল্যান্টের আয়ুষ্কাল বাড়ানো ভালো। বর্তমান পরিস্থিতিতে এগুলো আরও কয়েক বছর চালু রাখার ব্যাপারে জনমত তৈরি হচ্ছে।