কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মহানবীর অবমাননাকারী রাজা সিংয়ের জামিন

মহানবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) অবমাননাকারী তেলেঙ্গানা বিজেপির বিধায়ক টি রাজা সিংকে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জামিন দিয়েছেন আদালত। তাকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি উল্লেখ করে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশ্য এ সময় রাজাকেও সতর্কক করে দেন আদালত। পরে রাতেই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। খবর হিন্দুস্তান টাইমস ও দ্য হিন্দু।

মুক্তির পর নিজ বাড়িতে বিধায়ক টি রাজা সিং

টি রাজার আইনজীবী করুণা সাগর জানিয়েছেন, তার মক্কেলের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল ১৫৩ এ (ধর্মের নামে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা), ২৯৫ এ (কোনও বিশেষ ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করা), ৫০৫ (২) (হিংসা বা ঘৃণা ছড়াতে পারে এমন মন্তব্য ছড়ানো) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক হুমকি)। কিন্তু তিনি সেকশন ৪১ এ মানা হয়নি দাবি করে জামিন চেয়েছিলেন। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করে তাকে অবিলম্বে জামিনের নির্দেশ দিয়েছেন।

ভারতের স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান মুনাওয়ার ফারুকির সমালোচনা করতে গিয়ে ১০ মিনিটের একটি ভিডিও করেন তেলেঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা সিং। মুনাওয়ার ফারুকির ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে প্রথমে তিনি মুনাওয়ার ও তার মাকে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে তিনি মহানবীকে (সা.) নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য করেন।

গ্রেপ্তারের পর আদালতের পথে টি রাজা সিং

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই গত সোমবার থেকে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামে মুসলিম জনতা। ধীরে ধীরে বিক্ষোভ বাড়তে থাকলে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। এর পরপরই বিজেপিও দল থেকে তাকে সাসপেন্ড করে। বরখাস্তের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় মূল্যবোধ লঙ্ঘনের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হলো। এ সময় তার বিরুদ্ধে একটি শোকজ নোটিশও জারি করা হয়, ১০ দিনের মধ্যে যার জবাব দিতে বলা হয়।

একই সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে জামিন দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। অভিযুক্ত বিধায়ককে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে ভারতীয় আইনের অনুচ্ছেদ ৪১ মানা হয়নি বলে জামিনের নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত জুনে একটি টিভি শোতে মহানবীকে (সা.) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা। এরপর তাঁর নামে একাধিক মামলা হয়। দল থেকে তাকে সাসপেন্ড করা হয়। একই অভিযোগ এসেছিল আরেক মুখপাত্র নবীন জিন্দালের বিরুদ্ধেও। তার বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেয় ভারতের ক্ষমতাসীন দল। তবে এখনো তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।