ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতকে জার্মানি থেকে বের করে দেওয়ার আহ্বান

জার্মানিতে কিয়েভের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে মেলনিককে জার্মানি থেকে বহিষ্কার করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির রক্ষণশীল দলের এমপি ইয়েন্স লেহম্যান। তিনি বলেন, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সাথে সাক্ষাতকালে মেলনিক যেসব কথা বলেছেন, সেগুলো অত্যন্ত আক্রমণাত্মক। এজন্য তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে জার্মানি থেকে বের করে দেওয়া উচিত। খবর আরটি ওয়ার্ল্ড।

কিয়েভের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে মেলনিক

ইয়েন্স লেহম্যান বলেন, যিনি জার্মানিতে ইউক্রেনের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন তার জানা থাকা উচিত, জার্মানি কিয়েভকে কী পরিমাণে মানবিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দিয়েছে। তারপরও কিয়েভ জার্মানির নীতি ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে অভিযোগ করে চলেছে।

ইয়েন্স লেহম্যান জার্মানির মধ্য-ডানপন্থী জোট সিডিইউ/সিএসইউ থেকে নির্বাচিত, যা বর্তমানে জার্মানির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক জোট। তিনি গত সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব কথা বলেন।

হালকা-ভারি সব ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রই ইউক্রেনে পাঠিয়েছে জার্মানি

জানা গেছে, জার্মানিতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে মেনলিক দীর্ঘদিন ধরেই চলমান ইউক্রেন-রাশিয়ার সংঘাত নিয়ে জার্মানি ও এর কর্মকর্তাদের অবস্থানের সমালোচনা করে আসছেন। সম্প্রতি তিনি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজেরও সমালোচনা করেন।

এর আগে গত সপ্তাহে সিডিইউর একজন শীর্ষ নেতা মাইকেল ক্রেশমারকে ইউক্রেন সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মেলনিক। কিন্তু পরে কিয়েভের বিরুদ্ধে মস্কোর পাশে থাকার অভিযোগ এনে তার সেই আমন্ত্রণ বাতিল করা হয়। তিনি বলেন, আমি আপনাকে ইউক্রেনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। এই আমন্ত্রণ বাতিল করা হলো। কারণ আপনি অবাঞ্ছিত।

কিয়েভ সফরে বিলম্বের কারণে জার্মান চ্যান্সেলরের কড়া সমালোচনা করেন মেলনিক। ইউরোপের অন্য দেশের তুলনায় কিয়েভ সফরের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে জার্মানি। তবে এর যৌক্তিক কারণও আছে। এর আগে জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার ইউক্রেনের সরকার ও পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তির জন্য চেষ্টা চালিয়েছিলেন, শেষ পর্যন্ত কিয়েভ তা মানতে রাজি হয়নি। এ কারণে স্টেইনমায়ারকে তারা স্বাগত জানাতে রাজি নয়। ফলে জার্মানির নেতারা কিয়েভ সফরে আগ্রহ দেখায়নি।

গত জুলাইয়ের শুরুতে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি মেলনিককে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেন, যেটি তিনি ২০১৫ সালে গ্রহণ করেছিলেন। তবে তিনি কিয়েভে ফিরে যাওয়ার আগে বেশ কয়েক সপ্তাহ জার্মানিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। দেশে ফিরে যাওয়ার পর তাকে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী করার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইয়েন্স লেহম্যান ইউক্রেনের এই রাষ্ট্রদূতকে জার্মানিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে অবিলম্বে তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বার্লিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।