পোল্যান্ডের দাবি, ক্ষেপেছে জার্মানি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দাবি করায় ক্ষেপেছে জার্মানি। পোল্যান্ডের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে জার্মানি জানিয়েছে, পোল্যান্ড আগেও এ রকম দাবি করেছিল। সে সময় ক্ষতিপূরণ মওকুফ করেছিল তারা। মওকুফের বিষয়টি বারবার নিশ্চিত করেছিল পোল্যান্ড। নাৎসিদের আক্রমণ এবং দেশ দখলের জন্য জার্মানির কাছে প্রায় ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ চাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা জানিয়েছে জার্মানি। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

জারোস্লো কাকজিনস্কি

ল অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির নেতা জারোস্লো কাকজিনস্কি বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এই দাবি করেন। অনুষ্ঠানে জার্মান দখলদারিত্বের ক্ষয়ক্ষতি সম্বলিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

ওয়ারশ-এর রয়্যাল ক্যাসেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পোল্যান্ডের প্রধান নীতি নির্ধারক এবং প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকিসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তিন খণ্ডের প্রতিবেদনটি ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া যুদ্ধের বার্ষিকীতে প্রকাশ করা হলো।

৩০ জনের বেশি অর্থনীতিবিদ, ইতিহাসবিদ এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের একটি দল ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবেদনটি তৈরিতে কাজ করেছে। বিষয়টি নিয়ে পোল্যান্ড-জার্মানি দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ওই যুদ্ধে ত্রিশ লাখ ইহুদিসহ পোল্যান্ডের প্রায় ৬০ লাখ নাগরিক নিহত হয়। তাদের অনেকেই পূর্ব থেকে আক্রমণকারী সোভিয়েত রেড আর্মির শিকার ছিল।

কাকজিনস্কি বলেন, আমরা শুধু প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেই থেমে থাকব না। আমরা পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্তও নিয়েছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জার্মানির সাথে আলোচনা করব। ক্ষতিপূরণ পাওয়া সহজ হবে না, তবে একদিন আমরা আমাদের দাবিতে সফল হব। এই পদক্ষেপটি সত্যিকারের ‘পোলিশ-জার্মান পুনর্মিলন’ ঘটাবে।

কাকজিনস্কি বলেন, যুদ্ধাপরাধকারী অনেক জার্মান নাগরিক যুদ্ধের পরে জার্মানিতে দায়মুক্তি পেয়েছে। জার্মানি কখনোই পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে তার অপরাধের জন্য সত্যিকার অর্থে জবাবদিহি করেনি, অথচ জার্মান অর্থনীতি আমাদের ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করতে সক্ষম।

জার্মানির বক্তব্য

জার্মানি যুক্তি দিয়েছে, যুদ্ধের পরের বছরগুলোতে ইস্টার্ন ব্লকের দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। তখন পোল্যান্ড যে অঞ্চলগুলো নিয়ে গঠিত ছিল, সেই ভূমি নিরূপণ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। এখন বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা বন্ধ হয়ে গেছে।

জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন পোলিশ রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, পোল্যান্ড এর আগে ১৯৫৩ সালেও একবার ক্ষতিপূরণ চেয়েছিল। তারা অনেক ক্ষতিপূরণ মওকুফ করেছে এবং বারবার এই মওকুফের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।