রাশিয়া: ইউরোপে গ্যাস সংকটের জন্য যুক্তরাষ্ট্রই দায়ী

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউরোপীয় নেতাদের মস্কোর সাথে অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সহযোগিতা কমানোর আত্মঘাতী পদক্ষেপের দিকে ঠেলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে করে ইউরোপের গ্যাস সংকটকে উস্কে দিয়েছে দেশটি। খবর রয়টার্স।

নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন

চলতি মাসের শুরুতে রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পর অঞ্চলটি গ্যাস নিয়ে সবচেয়ে কঠিন সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। এর ফলে জ্বালানির দামও বেড়ে গেছে অনেকখানি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানি এখন সম্ভাব্য রেশনিং নিয়ে আলোচনা করছে।

নর্ড স্ট্রিম ১ থেকে আবার সরবরাহ শুরু করার ক্ষেত্রে কী করতে হবে জানতে চাইলে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, এ প্রশ্নের উত্তর শিশুরাও জানে। আর তা হচ্ছে, যারা এটি শুরু করেছেন তাদের এটি শেষ করতে হবে।

তিনি বলেন, জার্মানির মতো ইউরোপের শক্তিশালী দেশগুলোর সাথে রাশিয়ার জ্বালানি সম্পর্কগুলো নষ্ট করতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। অথচ মস্কো সোভিয়েত আমল থেকে জার্মানির একটি নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ হিসেবে ভূমিকা পালন করে এসেছে।

ভ্লাদিভোস্টকে ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকের ফাঁকে রয়টার্সকে জাখারোভা বলেন, ওয়াশিংটনের আধিপত্য তো রয়েছেই। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নে এমন সব রাজনৈতিক শক্তিকে ক্ষমতায় আনা হয়েছে যারা ‘ভেড়া-উস্কানিদাতাদের’ ভূমিকা পালন করছে। ফলে এটি সম্পূর্ণ আত্মহত্যা সত্ত্বেও তাদের মনে হচ্ছে এর মধ্য দিয়েই যেতে হবে।

মস্কো ইউরোপীয় গ্রাহকদের কাছে গ্যাস সরবরাহ কমানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে জ্বালানি ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ করেছে। তবে ক্রেমলিন বলছে, আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জ্বালানি সংকটের সূত্রপাত করেছে পশ্চিমারাই।

এদিকে জীবনযাত্রার উচ্চমূল্য ও জ্বালানির দাম নিয়ে ইউরোপজুড়ে ব্যাপকাকারে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। জার্মানির বাম দলের সহ-নেতা মার্টিন শিরদেওয়ান বলেন, যেহেতু কোনও বিশাল ত্রাণ প্যাকেজ নেই, তাই রাস্তায় তীব্র প্রতিবাদ করা হবে। আমরা ইতোমধ্যেই ফ্রাঙ্কফুর্টে বিক্ষোভ করেছি, এরফুর্টেও বিক্ষোভ করবো। পুরো জার্মানিতে আরও অনেক বিক্ষোভ হবে।

কয়েকদিন আগে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের ওয়েন্সেসলাস স্কয়ারে আনুমানিক ৭০ হাজার লোক বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ‘চেক রিপাবলিক ফার্স্ট’ স্লোগান দেয়। তারা সরকারকে ইউক্রেনের আগে নিজ দেশের নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানায়।

এদিকে, স্পুটনিক নিউজের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে, ফরাসি অর্থনীতিবিদ চার্লস গেভ দেশের জ্বালানি সংকট সমাধানে ব্যর্থতার জন্য ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সমালোচনা করেছেন। ইউরোপীয়রা বিশ্বাস করে, খারাপ রাশিয়ানরা তেল ও গ্যাসের ট্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে। আসলে আমাদের নেতারাই নির্বোধভাবে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করে ইউরোপীয় অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে।