দেশে ফের বেড়েছে বাল্যবিয়ে

করোনাকালে দেশে বেড়ে গেছে বাল্যবিয়ে। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে বাল্য বিয়ে বেড়েছে ১০ শতাংশ। এক জরিপে দেখা গেছে, বর্তমানে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের প্রায় ২৭ শতাংশের বিয়ে হয়েছে ওই দুই বছরে।

দেশে ফের বেড়েছে বাল্যবিয়ে

আজ রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক জরিপ প্রতিবেদনে বাল্যবিয়ের এ চিত্র তুলে ধরেছে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ওই জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।

ইউএনএফপিএর সহায়তায় জরিপটি চালিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। দেশের ২০টি জেলার ২৮২০ জন মেয়ের ওপর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ও ২০২২ সালের জানুয়ারিতে এ জরিপ চালানো হয়।

বাংলাদেশে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়েকে বাল্যবিয়ে হিসেবে গণ্য করা হয়।

ইউএনএফপিএর জরিপে এবার যাদের বয়স ১৫ থেকে ১৯ বছর, তাদের বিবেচনা করা হয়েছে। কারণ, বিবাহিত যেসব নারীর বয়স ১৯ বছর, ২০২০ সাল ও ২০২১ সালের শুরুতে তাদের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম।

ইউএনএফপিএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা মহামারির দুই বছরে ১৫–১৯ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে ২৭ শতাংশ মেয়ের। এই বয়সীদের মধ্যে ২০২০ সালে বিয়ে হয়েছে ২৪ শতাংশের ও ২০২১ সালে প্রায় ৩৪ শতাংশের।

ইউএনএফপিএর প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ২০২০ সালে করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার কারণেই হয়তো বাল্যবিয়ের হার বছরটিতে কম হয়ে থাকতে পারে। তবে জরিপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ নারীই জানিয়েছেন, করোনাকালে বাল্যবিয়ে বেড়েছে।

এদিকে জরিপে দেখা গেছে, একেক জেলায় বাল্যবিয়ের হার একেক রকম। যেমন রাঙামাটিতে ৪ শতাংশ ও লক্ষ্মীপুরে ৪০ শতাংশ মেয়ে বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। জরিপের সময় বিবাহিত ওই মেয়েদের মধ্যে ১৫ শতাংশ ছিল অন্তঃসত্ত্বা। অন্যদিকে বিবাহিত মেয়েদের মধ্যে মাত্র ২৪ শতাংশ স্কুলে ফিরতে পেরেছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান বলেন, জরিপে ২০২০ সালে বাল্যবিয়ে কম উঠে এলেও পরের বছরে বেড়েছে দেখানো হয়েছে। এটা কিছুটা বিভ্রান্তিকর মনে হচ্ছে। তবে বাল্যবিয়ে কমাতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।

অনুষ্ঠানে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন বলেন, বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ থেকে বাল্যবিয়ে নির্মূলে কাজ করছে। বাল্যবিবাহ রোধে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর।

অনুষ্ঠানে ইউএনএফপিএর উপপ্রতিনিধি মাসাকি ওয়াতাবে সমাপনী বক্তব্য দেন। সমস্যা সমাধানে সবাইকে মিলেমিশে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।