উস্কানির অভিযোগে ইরানে দুই ফরাসি নাগরিক আটক

সাম্প্রতিক বিক্ষোভে উস্কানি দেওয়া এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগে দুই ফরাসি নাগরিককে আটক করেছে ইরান। আটক ব্যক্তিরা এ ব্যাপারে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও দাবি করেছে ইরান। তবে পুরো প্রক্রিয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফ্রান্স বলেছে, বিষয়টি আপত্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য। খবর আনাদোলু ও হিন্দুস্তানটাইমস।

সিসিলি কোহলারের এই স্বীকারোক্তির ভিডিওটি প্রচার করে ইরান। ইনসেটে সিসিলি ও প্যারিস

তেহরান অভিযোগ করছে, কিছুদিন আগে ইরানে নারী পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনি নামের এক নারী অসুস্থ হয়ে মারা যায়। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে গত কিছু দিন ধরে সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত কয়েকটি গণমাধ্যম এতে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে।

এর পাশাপাশি ইরানের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী দাঙ্গায় রূপ দিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালান ট্যুরিস্ট ভিসায় আসা এক নারীসহ দুই ফরাসি নাগরিক। এক পর্যায়ে তেহরানের পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে এবং তারা এ বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন। তেহরান দাবি করে আটককৃত সিসিলি কোহলার এবং তার সঙ্গী জ্যাক প্যারিস ফ্রান্সের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে বৃহস্পতিবার এ স্বীকারোক্তির ভিডিওটি প্রচারিত হয়।

ইরানে চলমান বিক্ষোভ

ভিডিওতে দেখা গেছে, আটককৃত নারী বলছেন, আমি সিসিলি কোহলার ডিজিএসইর (ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর এক্সটার্নাল সিকিউরিটি) একজন গোয়েন্দা ও অপারেশন এজেন্ট। বর্তমান শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাতের জন্য মাঠ প্রস্তুত করতেই তারা ইরানে এনেছেন। ধর্মঘট ও বিক্ষোভে অর্থায়নের জন্য তারা প্রচুর অর্থ নিয়ে ইরানে প্রবেশ করেন। আটক অন্য ব্যক্তি জ্যাক প্যারিস বলেছেন, ইরান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করাই ছিল তাদের লক্ষ্য।

এদিকে ইরানের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা একে সবচেয়ে খারাপ স্বৈরাচারী শাসনের উদাহরণ হিসেবে আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে আটক দুজনের মুক্তি দাবি করেছে।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অ্যান-ক্লেয়ার লেজেন্ড্রে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘তাদের কথিত স্বীকারোক্তির মঞ্চায়ন আপত্তিকর, আতঙ্কজনক, অগ্রহণযোগ্য ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। তাদের এই কার্যকলাপ মানব মর্যাদার প্রতি অবমাননাকর। ব্যাপক চাপের মুখে তাদের কাছ থেকে এই স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। এর কোনো ভিত্তি নেই।’

তেহরানের অভিযোগ, গত মে মাসেও এই দম্পতি পর্যটক হিসেবে ইরানে এসেছিল। মে সময়ও তারা সরকার বিরোধী বিভিন্ন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল এবং শিক্ষক সমিতির সদস্যদের সাথে দেখা করে উন্নত মজুরি এবং কাজের পরিবেশ উন্নয়নের ব্যাপারে কথা বলেছিল।’

ইরান অনেক আগে থেকেই দাবি করে আসছে, ইরানের অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভে উস্কানি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ।