‘আর ভয় পাই না, আমরা যুদ্ধ করব’

ইরানে হিজাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চতুর্থ সপ্তাহে গড়িয়েছে। পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর দেশটির নারীরা বিক্ষোভ শুরু করে। প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে ইরানের রাস্তায় রাস্তায়। আমিনির দোষ ছিল, তিনি হিজাব ঢিলা করে পরেছিলেন এবং চুল সামান্য বেরিয়ে পড়েছিল। খবর এএফপি।

ইরানে হিজাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চতুর্থ সপ্তাহে গড়িয়েছে।

প্রথমে আমিনির নিজ শহর কুর্দিস্তান প্রদেশে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ শুরু করে। তারা নারীর নিরাপদ জীবন ও স্বাধীনতা চেয়ে স্লোগান দেয়। শনিবার এক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভে মেয়েরা তাদের হিজাব খুলে বাতাসে উড়াচ্ছে। কুর্দিস্তান প্রদেশের রাজধানী সানন্দাজের এক স্কুলে সরকারবিরোধি স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

এএফপির খবরে বলা হয়, শনিবার তেহরানের মোরারেস হাইওয়ের ওভারপাসে বড় ব্যানার টানানো হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘আমরা আর ভয় পাই না, আমরা যুদ্ধ করব।’ আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিলবোর্ডের লেখা ‘পুলিশ জনগণের সেবক’ কথাটি পরিবর্তন করে একজন লিখছেন ‘পুলিশ জনগণের হত্যাকারী।’

নরওয়ের কুর্দি অধিকার গোষ্ঠী হেনগাও জানিয়েছে, ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের সাকেজ, সানন্দাজ, দিভান্ডারেহ এবং পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের মাহাবাদে ব্যাপক ধর্মঘট হচ্ছে। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, সানন্দাজের রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলছে। বিক্ষোভে গুলি করছে পুলিশ। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শিরাজেও বিক্ষোভ হয়েছে।

এছাড়া তেহরানের পশ্চিমের শহর কারাজ ও দক্ষিণের কেরমানে বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। কয়েক ডজন লোক এক স্থানে জড়ো হওয়ার সাথে সাথে পুলিশ হর্ন বাজিয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়।

অসলো ভিত্তিক সংগঠন হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত ৯২ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের ক্র্যাকডাউন তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শনিবার তেহরানের একটি বিশ্বদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাবর্ষের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। দেশে অস্থিরতার জন্য বিদেশিদের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অপরাধীদের সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ইসলামি ইরান অনেক শক্তিশালী। ইরানের জনগণ ঐক্য ও সংহতির মাধ্যমে আগামীর সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠবে।