আপনি পড়ছেন

তাইওয়ান ইস্যুতে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় দক্ষিণাঞ্চলীয় ওকিনাওয়া দ্বীপপুঞ্জে বোম্ব শেল্টার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে জাপান। তাইওয়ান প্রণালীতে সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের সময় নাগরিকদের মিসাইল থেকে বাঁচাতে এসব শেল্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সাত কোটি ইয়েন বরাদ্দ করেছে জাপানের মন্ত্রিসভা। খবর নিক্কেই এশিয়া।

ukraine kiev bomb shelterচলতি সপ্তাহে রুশ বাহিনীর মিসাইল ও ড্রোন হামলার সময় কিয়েভের অধিবাসীরা মেট্রো রেলস্টেশনে আশ্রয় নেয়

জাপানের মুখ্য কেবিনেট সচিব হিরোকাজু মাতসুনো বলেছেন, আমরা স্পেসিফিকেশন, কারিগরি ও ব্যয় সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণ করবো। তাইওয়ানের সবচেয়ে কাছের ইয়োনাগুনি ও ইশিগাকি দ্বীপে শেল্টার নির্মাণে সরকার অগ্রাধিকার দেবে।

ওকিনাওয়া প্রশাসনিক অঞ্চলে বিদ্যমান ছয়টি বোম্ব শেল্টারের সবকটিই মূল দ্বীপে অবস্থিত। তাইওয়ান সংঘাতের সম্ভাব্য ঝুঁকিতে থাকা কয়েকটি দ্বীপের পৌরসভার প্রতিনিধিরা বোম্ব শেল্টার নির্মাণের পদক্ষেপ নিতে গত জুলাই মাসে ওকিনাওয়া প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছেন। উত্তর কোরিয়া একের পর এক ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করতে থাকায় রাজধানী টোকিওতেও ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা আরও অধিক সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি তুলেছেন।

ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব হিরোশিগে সেকো বলেছেন, বোমা থেকে বাঁচতে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করতে হলে সরকারের অর্থ ব্যয় হবে। তবে ইউক্রেনে আমরা যেমন দেখেছি, ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় লুকিয়ে পড়লে আপনি আরও বেশি নিরাপদ থাকতে পারবেন।

সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ে ব্যক্তি-মালিকানাধীন আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কথাও ভাবা হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা জানিয়েছেন। গত ৬ অক্টোবর পার্লামেন্টে বিরোধীদল ডেমোক্রেটিক পার্টি ফর দ্য পিপলের (ডিপিপি) নেতা ইয়োচিহিরো তামাকির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

মিসাইল হামলা ও বোমা বিস্ফোরণ থেকে এক-দুই ঘণ্টার জন্য সুরক্ষা দিতে পারে এমন কাঠামোকে জাপান সরকার অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে শ্রেণীকরণ করেছে। গত বছরের এপ্রিল পর্যন্ত জাপানে মোট ৫১ হাজার ৯৯৪টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রের কথা জানা যায়। তবে এর মধ্যে কেবল ১ হাজার ২৭৮টি ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে।

জানা গেছে, কতটা শক্তিশালী বিস্ফোরণের মুখে টিকতে পারলে একটি কাঠামোকে আশ্রয়কেন্দ্র বিবেচনা করা হবে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো মানদণ্ড নেই। ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর গভীরতাও একেক জায়গায় একেক রকম। ঘাত-সহিষ্ণুতার প্রত্যাশিত মাত্রাও স্পষ্ট নয়। সরকারি তালিকাভূক্ত আশ্রয়কেন্দ্রের ১০ শতাংশই টোকিওতে, যার অর্থ হলো দেশের অন্যান্য জায়গায় জনঘনত্ব অনুযায়ী আশ্রয়কেন্দ্র কম।

গত ৪ অক্টোবর জাপানের উপর দিয়ে উত্তর কোরিয়া ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়লে আওমোরি ও হোক্কাইডো প্রশাসনিক অঞ্চলে সতর্কতা জারি করা হয়। আওমোরি ও হোক্কাইডোতে যথাক্রমে ৮ ও ১৬টি ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে, যা অপর্যাপ্ত। আশ্রয়কেন্দ্রে শৌচাগার, বিশ্রামকক্ষ, খাদ্য ও চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা রাখা জরুরি। প্রবীণ, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য অনুকূল ব্যবস্থা থাকা দরকার। কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রবেশদ্বার সংস্কার করা জরুরি। বোমা বিস্ফোরণের ধকল নিতে পারে এমন পুরু দরজা লাগাতে হবে।

সুইজারল্যান্ড, ইসরায়েল ও সিঙ্গাপুরে সরকারি-বেসরকারি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সুইজারল্যান্ডের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো সে দেশের ৯০ শতাংশ থেকে শতভাগ মানুষের জায়গা দিতে সক্ষম। সম্প্রতি ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল ও বোমা হামলার সময় স্থানীয়রা ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছে।

ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমির প্রফেসর নাওফুমি মিয়াসাকা বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের বিষয়টি একটি দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ হওয়া উচিত। নির্মাণই শেষ কথা নয়, জরুরি পরিস্থিতিতে বাধাহীন যোগাযোগ নিশ্চিতে নিয়মিত প্রশিক্ষণও নিশ্চিত করতে হবে।

 

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.