অস্ট্রেলিয়ায় চার-ছক্কার যুদ্ধ শুরু

দুইটি ফুটবল বিশ্বকাপের সঙ্গে সময়ের ব্যবধান অন্তত চার বছরের। ক্রিকেটে অবশ্য ‘ঘনঘন’ বিশ্বকাপ দেখা যাচ্ছে। গত বছরই তো সংযুক্ত আরব আমিরাতে মঞ্চস্থ হয়েছিল কুড়ি ওভারের বিশ্বমঞ্চ। সেই রেশ এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যে আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সাক্ষ্যি হতে যাচ্ছে ক্রিকেট দুনিয়া।

অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

আজ শুরু হচ্ছে সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের অষ্টম আসর। তবে টুর্নামন্টের আসল শুরু ২২ অক্টোবর থেকে। সেদিন থেকেই মাঠে গড়াবে মূল পর্ব তথা সুপার ফোরের ম্যাচগুলো। ১২-তে জায়গা করে নিতে আটটি দল খেলতে নামছে বাছাইপর্ব। এখান থেকে চারটি দল টিকিট পাবে সুপার টুয়েলভে।

এই বাছাইপর্বে খেলতে হচ্ছে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। একমাত্র দল হিসেবে দুবার কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ জিতেছে ক্যারিবীয়রা। কিছুদিন আগে শেষ হওয়া এশিয়া কাপজয়ী শ্রীলঙ্কাকেও মূলপর্বের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সাফল্য আছে তাদের। কিন্তু ভাগ্য তাদের ছিটকে দিয়েছে বাছাইপর্বে।

সুপার টুয়েলভে যাওয়ার পথে দুই দলই ফেভারিট। গ্রুপ ‘এ’তে শ্রীলঙ্কা সঙ্গী হিসেবে পেয়েছে নামিবিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নেদারল্যান্ডসকে। আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে গড়া হয়েছে ‘বি’ গ্রুপ। এই পর্বে প্রতিটি দল খেলবে সমান তিনটি করে ম্যাচ। দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল উঠে যাবে পরের রাউন্ডে।

আজ টুর্নামেন্টের প্রথম দিনে মাঠে নামছে ‘এ’ গ্রুপের চারটি দলই। সকালে উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কা লড়বে নামিবিয়ার সঙ্গে। দুপুরে নেদারল্যান্ডসের প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত। আগামীকাল থেকে শুরু হবে বাছাইয়ের বাকি চার দলের যাত্রা। ২১ অক্টোবর শেষ হবে প্রথম রাউন্ড বা বাছাইপর্বের ম্যাচ।

বাছাইপর্ব বিধায় আজ বিশ্বকাপকে ঠিক শুরু বলা কঠিন। আসল শুরু যে আগামী সপ্তাহে! বড় দলগুলো অংশ না নিলে আসলে কোনো প্রতিযোগিতাই আসলে সঠিক আবহে থাকে না। ২২ অক্টোবর সিডনিতে ‘আসল’ শুরুর ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। পরদিন বহুল প্রত্যাশিত ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ মেলবোর্নে।

সুপার টুয়েলেভের গ্রুপ ‘এ’-তে আছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তান। অন্য দুটি দল আসবে বাছাইপর্বের বাধা ডিঙিয়ে। গ্রুপ ‘বি’ আছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্য দুটি দল যোগ দেবে বাছাইপর্বের পর। এই পর্বে সবকটি দল সমান পাঁচটি করে ম্যাচ খেলবে। দুই গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল পাবে সেমিফাইনালে টিকিট। ১৩ নভেম্বর ফাইনাল।

অস্ট্রেলিয়ায় প্রথমবার বসতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। এটি হবে টুর্নামেন্টের অষ্টম আয়োজন। প্রথম আসর বসেছিল ২০০৭ সালে। চিরশত্রু পাকিস্তানকে হারিয়ে ওই আসরে শিরোপা জেতে ভারত। পরের বছর সেই হারের হতাশা পাকিস্তান ভুলেছে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। ২০১০ সালের শিরোপা ওঠে ইংল্যান্ডের হাতে।

পরের তিন আসরের দুটিতেই ট্রফি জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর ফাঁকে শ্রীলঙ্কা করে শাপমোচন। তৃতীয় প্রচেষ্টায় ফাইনাল হারের বৃত্ত ভাঙে তারা। সবশেষ গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই সংস্করণের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় অস্ট্রেলিয়া। এবারের আসরে শিরোপা ধরে রাখার লড়াই করবে তারা। স্বাগতিক এবং ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে তাদের ওপর থাকছে প্রত্যাশার বাড়তি চাপ।

বাছাই থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত বিশ্বকাপ গড়াবে সাতটি আলাদা ভেনুতে। সেগুলো হচ্ছে অ্যাডিলেড, ব্রিসবেন, গিলং, হোবার্ট, পার্থ, মেলবোর্ন ও সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড। বাছাইয়ে ‘বি’ গ্রুপের সব ম্যাচের মঞ্চ হোবার্ট। ‘এ’ গ্রুপের সব ম্যাচ অনষ্ঠিত হবে গিলংয়ে।