তুরস্ক: সৌদির উপর দাদাগিরি করছে যুক্তরাষ্ট্র

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেছেন, ‘তেলের উৎপাদন কমানোর ইস্যুকে ঘিরে সৌদি আরবের উপর দাদাগিরি করছে যুক্তরাষ্ট্র, এটা ঠিক নয়। জ্বালানি তেলের দাম কমাতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কটু কথা না বলে ইরান ও ভেনিজুয়েলার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা।’ খবর টিআরটি।

সৌদি আরবের সঙ্গে মার্কিন আচরণকে দাদাগিরি বলে অভিহিত করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যা করছে তা দাদাগিরি ছাড়া কিছু নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির জন্য ওপেকের উৎপাদন হ্রাস দায়ী নয়। তেলের মূল্য আগে থেকে বেড়ে আছে। ভেনিজুয়েলার তেল ও গ্যাস সারা পৃথিবীর দরকার। ইরানের তেলের উপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আপনারা সত্যিই যদি বাজারে তেলের দাম কমাতে চান, তাহলে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেন।

আজ শুক্রবার সকালে তুরস্কের মারসিন প্রদেশে একে পার্টির এক সভায় অংশ নেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। সভাশেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তুৃরস্কের ক্ষমতাসীন দলের জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

গত ৫ অক্টোবর তেল রপ্তানিকারকদের জোট ওপেক দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় এ সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দিয়েছিল ওপেকের বাইরে থাকা রপ্তানিকারকরাও, যা সম্মিলিতভাবে ওপেক প্লাস নামে পরিচিত। ওপেক জোটের বর্তমান সভাপতি সৌদি আরব উৎপাদন হ্রাসের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানায়।

ওপেক প্লাসের বৈঠকে উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্তের পর থেকে সৌদি আরবকে লক্ষ্য করে বাক্যবাণ ছুঁড়তে থাকেন মার্কিন কর্মকর্তারা। হোয়াইট হাউস অভিযোগ করে, সৌদি আরব কেবল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছে, তা নয়। সৌদিরা অন্য দেশের উপরও আড়ালে থেকে প্রভাব সৃষ্টি করেছে যাতে তারা উৎপাদন হ্রাসের প্রশ্নে একমত হয়। সৌদি কর্মকর্তারা রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্তের পর থেকে সৌদি আরবে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ ও দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক পর্যালোচনার হুমকি দিয়ে আসছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে পর্যন্ত উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত স্থগিত করার জন্যও সৌদি আরবের প্রতি অনুরোধ জানায় বাইডেন প্রশাসন। সৌদি আরব ওই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে।

সৌদি আরবের বিরুদ্ধে এমন নজিরবিহীন মার্কিন আক্রমণের প্রেক্ষিতে রিয়াদের পক্ষ সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরানের কর্মকর্তারা। আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তেল উৎপাদন হ্রাসের বিষয়ে সৌদি আরব যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার তা সমর্থন করে। অন্যদিকে ইরানের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বরাবরের মতোই জবরদস্তিতে বিশ্বাস করে, এটা আবারও প্রমাণ হলো।