বিশ্বে প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার যেন ‘মিথ’

প্লাস্টিক বর্জ্য বৃদ্ধি পেলেও বিশ্বে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের হার আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। প্লাস্টিক বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে চিন্তা করা হচ্ছিল তা এখন কল্পকাহিনীতে পরিণত হতে যাচ্ছে। বিশ্বের যেসব কোম্পানি প্লাস্টিক উৎপাদন করে, তারা লেভেলে ‘পুনর্ব্যবহারযোগ্য’ লিখলেও আসলে তা ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। খবর এএফপি।

বিশ্বে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার যেন ‘মিথ’

গ্রিনপিস ইউএসএ’র ‘সার্কুলার ক্লেইমস ফল ফ্ল্যাট এগেইন’ শীর্ষক এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদিত ৫১ মিলিয়ন টন প্লাস্টিকের মধ্যে মাত্র ২.৪ মিলিয়ন টন পুনর্ব্যবহার হয়েছে, যা মাত্র ৫ শতাংশ। ২০১৪ সালের জরিপে দেখা গিয়েছিল, বিশ্বের মোট প্লাস্টিকের মাত্র ১০ শতাংশ পুনর্ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই প্রবণতা কমে যাচ্ছে।

খবরে বলা হচ্ছে, ২০১৮ সাল থেকে মার্কিন প্লাস্টিক বর্জ্য গ্রহণ করা বন্ধ করে দিয়েছে চীন। পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয় এমন প্লাস্টিকের উৎপাদন বেড়েই চলেছে।

গ্রিনপিস ইউএসএ’র প্রচারক লিসা রামসডেন এএফপিকে বলেন, বিশ্বের বড় বড় শিল্প গ্রুপ ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিক বর্জ্যের সমাধান হিসেবে পুনর্ব্যবহারের জন্য চাপ দিচ্ছে। তবে এটা তাদের মুখেই। কার্যকর কোনো পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে না।

সমীক্ষায় বলা হয়, সাধারণত কোকাকোলা, পেপসিকো, ইউনিলিভার এবং নেসলের মতো কোম্পানি বিশ্বে প্লাস্টিক বর্জ্য সৃষ্টির জন্য প্রধান দায়ী।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাত্র দুই ধরনের প্লাস্টিক সবচেয়ে বেশি পুনর্ব্যবহারযোগ্য। প্রথমটি হলো পলিথিলিন টেরেফথালেট (পিইটি) ও দ্বিতীয়টি উচ্চ ঘনত্বের পলিথিলিন (এইচডিপিই)। প্রথমটি পানি ও সোডার বোতল তৈরিতে এবং দ্বিতীয়টি দুধের জগ, শ্যাম্পুর বোতল এবং পরিষ্কারকের বোতল তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

মূলত সাত প্রকার প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারযোগ্য। এগুলো ১ থেকে ৭নং হিসেবে নামকরণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ১ ও ২নং পিইটি এবং এইচডিপিই পণ্যের প্রকৃত পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের হার যথাক্রমে ২০.৯ এবং ১০.৩ শতাংশ। তবে এই ধরনের প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার ২০২০ সালের পর আরও কমেছে।

পুনর্ব্যবহারযোগ্য অন্য প্লাস্টিকগুলোর মধ্যে রয়েছে, শিশুদের খেলনা, প্লাস্টিকের ব্যাগ, পণ্যের মোড়ক, দই ও মার্জারিন টব, কফির কাপ ও খাবারের পাত্র। তবে এগুলো পুনর্ব্যবহারের হার কমে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।