আপনি পড়ছেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আড়ালে উপহাস করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় তিনি বাইডেনকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেন এবং তার মানসিক স্থিরতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। সৌদি সরকারের অন্দরমহলের সূত্রের বরাতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ কথা জানিয়েছে।

us saudi biden mbsসৌদি সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাইডেনকে নিয়ে আড়ালে হাসি-ঠাট্টা করেন মোহাম্মদ বিন সালমান

সূত্র জানায়, ৩৭-বছর বয়সী সৌদি যুবরাজ তার উপদেষ্টাদের বলেছেন, বাইডেন যখন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অধীনে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখনও তাকে পছন্দ হয়নি। এর চেয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক ভালো ছিল।

‘ইউএস-সৌদি রিলেশনস বাকল, ড্রাইভেন বাই এনিমোসিটি বিটুইন বাইডেন অ্যান্ড মোহাম্মদ বিন সালমান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চলকের কারণে কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরব সম্পর্কে যে ফাটল দেখা দিয়েছিল, বাইডেন ও মোহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার অভাব তার গতি বাড়িয়ে দিয়েছে।

সৌদিরা তেল দেবে আর মার্কিনিরা সৌদি শাসকদের নিরাপত্তা দেবে এ মর্মে অঘোষিত বোঝাপড়ার ভিত্তিতে বহু বছর টিকেছিল ওয়াশিংটন ও রিয়াদের সম্পর্ক। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ জন প্রেসিডেন্ট ও সৌদিতে ৭ জন বাদশাহ এসেছেন ও বিদায় নিয়েছেন, পারস্য উপসাগরে দুটি যুদ্ধ ঘটে গেছে এবং ১১ সেপ্টেম্বরের মতো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা অতিক্রান্ত হয়েছে। সবকিছুর মধ্যেও দুই পক্ষের বোঝাপড়াটা অটুট ছিলো। তবে এখন পরস্পরকে বিশ্বাস ও পছন্দ করেন না, এমন দুই নেতার চাপে এ সম্পর্ক ভেস্তে যেতে বসেছে।

বাইডেন তার নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময়ই সৌদির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দেন। ক্ষমতাগ্রহণের পর এক বছর তিনি মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। শেষপর্যন্ত জুলাই মাসে তিনি তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির অনুরোধ নিয়ে সৌদিতে গেলেও তাকে গুরুত্বপূর্ণ নীতি-সংক্রান্ত আলোচনায় যথেষ্ট অনিচ্ছূক মনে হয়েছে বলে সৌদি সূত্রগুলো জানায়। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, বাইডেন সেখানে বিভিন্ন বৈঠকে অনেক সময় ও মনোযোগ দিয়েছেন।

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কূটনীতিক আরন ডেভিড বর্তমানে কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসে আছেন। বাইডেন ও মোহাম্মদের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, পরস্পরকে বারবার আশাহত করার ধারা কখনো এতো দীর্ঘ ছিল না। বলা যায়, পারস্পরিক বিশ্বাস বলতে কিছু নেই, পারস্পরিক শ্রদ্ধার নামগন্ধও নেই।

যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন সামনে থাকাবস্থায় এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের উপর্যুপরি অনুরোধ সত্ত্বেও সৌদি নেতৃত্বাধীন ওপেক প্লাস তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মার্কিন ও সৌদি নেতারা দুই পক্ষের কৌশলগত সম্পর্ক পর্যালোচনার পক্ষে আরও শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে এ কথা বলা হয়েছে। সৌদি কর্মকর্তারা বলছেন, তারাও ভাবছেন ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করবেন।

সৌদি কর্মকর্তারা জানান, মার্কিনিরা এখনো তেল ও নিরাপত্তার সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিতে দুই দেশের সম্পর্ককে মাপছে দেখে তারা হতাশ। তেলের বাজারে মূল্য বজায় রাখা যে সৌদি অর্থনীতিকে তেল-উত্তর যুগে নিতে যুবরাজের স্বপ্নপূরণের পাথেয় হবে, যুক্তরাষ্ট্র তা বুঝছে না। ওয়াশিংটন যদি রিয়াদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে সৌদি সরকার তাদের হাতে থাকা মার্কিন বন্ড বিক্রি শুরু করবে। সৌদি সরকারের কাছে ১১ হাজার ৯০২ কোটি ডলারের ট্রেজারি বন্ড রয়েছে।

সৌদি সরকার সে দেশের অর্থনীতির রূপান্তরের প্রয়াস তুলে ধরতে চলতি সপ্তাহে রিয়াদে ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট ইনিশিয়েটিভ নামের এক আয়োজন করেছে। অতীতে এ ধরনের আয়োজনে মার্কিন মন্ত্রীরা এলেও এবার তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের গৃহীত এজেন্ডা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা শুধু তেল আর নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়। ৫০ বছর আগে ওই তত্ত খাটলেও এখন তার উপযোগিতা নেই। যুবরাজ মোহাম্মদ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে উপহাস করেন বলে বিভিন্ন সূত্র যে তথ্য দিয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.