শরণার্থীদের কিয়েভ: এখনই ফেরার দরকার নেই

ইউক্রেনের পৌনে এক কোটির বেশি নাগরিক ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। অন্তত শীত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের দেশে না ফেরার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন সরকার। রাশিয়ার অব্যাহত হামলায় দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে এ আহ্বান জানানো হয়। খবর রয়টার্স।

ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিয়ানা ভেরেশ্চুক

ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিয়ানা ভেরেশ্চুক শরণার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ভঙ্গুর বিদ্যুৎ অবকাঠামো আগামী দিনের পরিস্থিতি সামলাতে পারবে না। রাশিয়া এ কয়দিনে কী করেছে তা তো আপনারা দেখেছেন। এ অবস্থায় ইউক্রেনে শীত মওসুম পার করাটা কঠিন হবে।

ভেরেশ্চুক বলেন, তিনি চান বসন্তেই বিভিন্ন দেশে থাকা ইউক্রেনের নাগরিকেরা দেশে ফিরে আসুক। দিনকে দিন পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। তাই সম্ভব হলে আরও কিছুদিন দেশের বাইরে থাকাই ঠিক হবে।

ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলা

ভেরেশ্চুক আরও বলেন, বিদেশ থেকে শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনে আপাতত পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না, বরং খারাপ হবে। এখন ফিরে আসার অর্থ হল নিজেকে, সন্তানকে, দুর্বল আত্মীয়-স্বজনদের আরও বেশি ঝুঁকিতে ফেলা। যদিও আশ্রয় নেওয়া দেশে জীবিকা নির্বাহের জন্য কঠোর সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

এদিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার সাম্প্রতিক বিমান ও ড্রোন হামলায় দেশের জ্বালানি অবকাঠামোর ৪০ শতাংশের বেশি ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে কিয়েভসহ দেশের বিভিন্ন অংশে বারবার ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটছে।

কিয়েভের একজন সরকারি কর্মকর্তা গত সপ্তাহে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দেশজুড়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভয়াবহ ধরনের খারাপ। তাই সবাইকে কয়েক দিন, এমনকি কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতির জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের হামলা শুরু করে রাশিয়া। এরপর হামলার ব্যাপ্তি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ইউক্রেনের নাগরিকরা সীমান্ত পেরিয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর হিসেব অনুযায়ী রাশিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এখন পর্যন্ত ৭৭ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছে। দেশের মধ্যেও বাস্তুচ্যুত হওয়া ইউক্রেনীয় নাগরিকের সংখ্যা একেবারে কম নয়।