বাবর আজম এখন ‘জঘন্য, স্বার্থপর’

উপমহাদেশের ক্রিকেটের প্যাটার্নটাই এমন। জিততে থাকলে সব ভালো। হারতে থাকলে সব খারাপ। বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচের পর বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়। গত বছরের বিশ্বকাপে বিরাট কোহলিদের হারিয়ে দেওয়ার পর পুরো পাকিস্তান টিমের যেমন প্রশংসা হয়েছে, তেমনি প্রশংসায় ভেসেছেন বাবর-রিজওয়ানও। এর পর একেরপর এক রেকর্ড ভেঙে এগিয়ে গেছেন তারা। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি পুরোপুরি বিপরীত।

বাবর আজম এখন ভিলেনের তালিকায়

এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের ভারতের কাছে হেরে গেছে পাকিস্তান। পরের ম্যাচে অপ্রত্যাশিতভাবে শেষ বলে জিম্বাবুয়ের কাছেও হেরে যায় তারা। এরপর থেকে তোপের মুখে পড়েছেন অধিনায়ক বাবর আজম। পুরোপুরি ভিলেনের চরিত্রে হাজির হয়েছেন দেশবাসীর সামনে। দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে বা বল হাতে তেমন কেউ জ্বলে উঠতে না পারলেও পুরো দায় পড়েছে বাবরের ঘাড়ে। বিশেষ করে কেন তিনি ওপেনিং পজিশনটা ছাড়ছেন না তা নিয়ে তাকে তুলোধুনা করা হচ্ছে। তাকে সমর্থন করায় পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজাও কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

পাকিস্তান সুপার লিগের একটি ঘটনা টেনে এনে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ওয়াসিম আকরাম বাবরকে স্বার্থপর বলে অভিহিত করেছেন। বলেছেন, বাবর তার নিজের জায়গা নিয়েই চিন্তিত। দল ভাল খেলল না খারাপ, সে দিকে তার কোনো লক্ষ্য নেই। যদি দলের অধিনায়ক এমন স্বার্থপর হয়, তা হলে বাকিরা কী করবে? এ রকম অধিনায়ক থাকার কারণেই পাকিস্তান ধারাবাহিকভাবে হারছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বাবরের সমালোচনা করছেন ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস ও শোয়েব আখতার

একই ধরনের অভিযোগ করে আরেক সাবেক অধিনায়ক ওয়াকার ইউনুস বলেন, টি-টোয়েন্টিতে ওপেন করা সব থেকে সহজ। দীর্ঘদিন ধরে রিজওয়ানকে সাথে নিয়ে নিজেই ওপেন করছেন বাবর। অন্য কাউকে ওপেন করতে দিচ্ছেন না তিনি। এর ফলে বিপক্ষের পরিকল্পনা করতে সুবিধা হচ্ছে। বাবরের সমালোচনা করে তার বক্তব্য, দলই যদি জিততে না পারে তা হলে আইসিসি লিস্টে শীর্ষে থেকেই বা লাভ কী?

পাকিস্তানের হারের পেছনে বাবরকে দায়ী করে কড়া সমালোচনা করেছেন স্পিডস্টার শোয়েব আখতারও। বাবরকে ‘জঘন্য অধিনায়ক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, পাকিস্তান আসলে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছে। হিসাবনিকাশে সুযোগ থাকলেও আসলে পাকিস্তান এই টুর্নামেন্টে আর নেই। এটাই সত্যি।

তার মতে, জয়ী হওয়ার জন্য বাবরের বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। যেখানে চারজন পেসার খেলানোর দরকার সেখানে তিনজনকে খেলাচ্ছে, শাহিন আফ্রিদি অসুস্থ হওয়ার পরও তাকে ম্যাচে নামাচ্ছে। সব মিলিয়ে বাবরের জঘন্য ক্যাপ্টেনসির কারণেই পাকিস্তানের এই দশা।

পরপর দুই ম্যাচে হারলেও কাগজে-কলমে এখনো পাকিস্তানের সুযোগ রয়েছে সেমিফাইনালে যাওয়ার। সমর্থকরা বলে থাকে, এমন অবস্থাতেই পাকিস্তান বেশি ভালো খেলে। আর তেমনটি যদি হয়, বাবরের পরিচয় পাল্টে যেতে পারে আবারো। ভিলেন থেকে হয়ে উঠতে পারেন নায়ক।