জলবায়ু বাস্তুচ্যুতির ঝুঁকিতে মধ্যপ্রাচ্যের লাখ লাখ মানুষ

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে মধ্যপ্রাচ্যের লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার হুমকিতে রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিপাত, আক্রমণাত্মক তাপপ্রবাহ এবং ক্রমবর্ধমান খরা মধ্যপ্রাচ্যকে বিশ্বের সবচেয়ে পানিশূণ্য অঞ্চলে পরিণত করেছে। এ অঞ্চলের দেশগুলো এখন বিশ্বের সবচেয়ে শুষ্ক দেশগুলোর মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। এএফপির খবর।

২০৬০ সালের মধ্যে মিশরের কৃষি খাত ৪৭ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হতে পারে

আগামী নভেম্বরে মিশরে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ২৭ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মিশরের কৃষকদের সিন্ডিকেটের প্রধান হোসেন আবু সাদ্দাম এএফপিকে বলেন, তিনি নিজেই গ্রামাঞ্চল থেকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে স্থানান্তরের সাক্ষী। নতুন জলবায়ুজনিত বিপদের কারণে মিশরের কৃষি আরও কম লাভজনক হয়েছে। মিশর এখন বিশ্বের সবচেয়ে শুষ্ক দেশগুলোর মধ্যে একটি।

খবরে বলা হচ্ছে, মিশরের মতো দেশগুলো এখন পরজীবীর চেহারায় রূপ নিয়েছে। জলবায়ুজনিত কারণে ক্ষুধা, দারিদ্র্য বাড়ছে। আবু সাদ্দাম বলেন, গ্রামাঞ্চলের তরুণরা শিল্প-কারখানায় কাজ করার জন্য বিদেশে বা বড় শহরে পাড়ি জমাচ্ছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) অনুসারে, প্রায় ৯০ শতাংশ শরণার্থী এমন দেশ থেকে আসে, যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। জলবায়ুজনিত কারণে দেশগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং কম প্রস্তুত।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আই্ওএম) ডেপুটি ডিরেক্টর অ্যামি পোপ এএফপিকে বলেন, মানুষ যদি কৃষিকাজ করতে না পারে, কাজ করে খেতে না পারে, খাবার খুঁজে না পায়, তাহলে তাদের কাছে বাস্তুচ্যুতির কিছু বিকল্প আছে বলে মনে হয় না।

২০২১ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের তিন মিলিয়ন মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি কেবল আরও খারাপ হতে চলেছে। গবেষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ২০৬০ সালের মধ্যে মিশরের কৃষি খাত ৪৭ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হতে পারে।

সেন্টার ফর ইকোনমিকস রিসার্চ ফেলো ফ্লোরিয়ান বোনেফোইয়ের মতে, ‌'কৃষি উৎপাদন হ্রাস' ছাড়াও গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন বৃদ্ধি পাচ্ছে, শহুরে জীবনের প্রতি গ্রামীণ আকর্ষণ সৃষ্টি হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক মনে করে, যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ২০৫০ সালের মধ্যে উত্তর আফ্রিকার ১৯.৩ মিলিয়নসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২১৬ মিলিয়ন মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হবে।