কাতার বিশ্বকাপ: চমকে দিতে চায় অস্ট্রেলিয়া

আগের তিনটি বিশ্বকাপেই গ্রুপপর্বে বিদায় নিতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। এবারো টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই চোখ রাঙাচ্ছে। কারণ গ্রুপের আন্ডারডগ ক্যাঙ্গারুরা। ‘ডি’ গ্রুপে তাদের তিন প্রতিপক্ষ বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, ইউরোপের উঠতি পরাশক্তি ডেনমার্ক ও আফ্রিকান জায়ান্ট তিউনিসিয়া। এই গ্রুপের ফেভারিট হিসেবে ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়াকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে।

এবারের বিশ্বকাপে ড্রয়ের বৃত্ত ভাঙতে চায় অস্ট্রেলিয়া

তিউনিসিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া প্রায় সমশক্তির। এই দুটি দলের গ্রুপপর্বে বাদ পড়ার আশঙ্কা আছে। যদিও বিশ্বকাপে কখন যে কী ঘটে যায় তার নিশ্চয়তা দেওয়া কঠিন। কারণ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের গ্রুপপর্বে বাদ পড়ার ঘটনা গত কয়েকটি বিশ্বকাপের আলোচিত ঘটনা হয়েই এসেছে। ইতিহাসের দুষ্টচক্রে ফ্রান্স পড়তে পারে অস্ট্রেলিয়া অঘটন ঘটাতে পারলে।

এই গ্রুপ থেকে পরের রাউন্ডে হলুদ শিবির উঠতে পারলে সেটা হবে বড় চমক। অবশ্য নক আউট পর্বে খেলার অভিজ্ঞতা অস্ট্রেলিয়ার এমনিতেও আছে। ২০০৬ বিশ্বকাপে শেষ ষোলোতে উঠেছিল তারা। পরের তিনটি আসরেই গ্রুপপর্বে থেমেছে তাদের পথচলা। এবার বৃত্ত ভাঙার চ্যালেঞ্জ অস্ট্রেলিয়ার।

তারকা: টিম কাহিলের যখন ক্যারিয়ারের সীমান্ত তখন কেবল বসন্তের শুরু হয় ম্যাথু লোকির। কিংবদন্তিদের গড়পড়তা বিদায়ের পর তিনিই হাল ধরেন অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলের। কার্যত নেতৃত্বের জোয়ালও তাঁর কাধে। ২০১২ সালে ক্যাঙ্গারুদের জার্সিতে অভিষেক হয় লোকির। দেশের হয়ে এ পর্যন্ত ৭৩ ম্যাচে ১৩টি গোল করেছেন এই ফরওয়ার্ড।

মূল পজিশন আক্রমণভাগে হলেও বেশির ভাগ সময় খেলা তৈরি করার ভূমিকাতেই তাকে দেখা যায়। ৩১ বছর এই ফুটবলার বর্তমানে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই নতুন। এবারের কাতার বিশ্বকাপে কচিকাঁচার দল নিয়েই খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। এসব তরুণদের লোকি কতটা অনুপ্রাণিত করতে পারেন সেটাই দেখার অপেক্ষা।

প্রধান কোচ: খেলোয়াড় ভূমিকায় অনেক আগেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন গ্রাহাম আরনল্ড। তার সামনে কোচ হিসেবে বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চতুর্থ মেয়াদে কাজ করছেন তিনি। আগের তিনবারের দুবারই সহকারী হিসেবে। একবার ছিলেন ভারপ্রাপ্ত কোচ। ২০১৮ সালে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান আরনল্ড।

তার দুর্দান্ত কোচিংয়ের সুবাদে বাছাইপর্বের গণ্ডি পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। এবার মূলপর্বের বাধা পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন আরনল্ড। কাজটা কঠিন। কারণ প্রায় তরুণ একটা দল নিয়েই এগোতে হচ্ছে তাকে। টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া ৩২ মধ্যের যে কয়টি তরুণ দল আছে তাদের একটি অস্ট্রেলিয়া।

কিংবদন্তি: অস্ট্রেলিয়ার ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কিংবদন্তি টিম কাহিল। ১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার তিনি শেষ করেন ২০১৮ সালে। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা এই ফরওয়ার্ড। ১০৮ ম্যাচে কাঁটায় কাঁটায় ৫০টি গোল করেছেন তিনি। ক্যাঙ্গারুদের জার্সিতে ম্যাচ সংখ্যায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ডটা তার দখলে।

সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন সাবেক গোলরক্ষক মার্ক শারজার। ১০৯টি ম্যাচ খেলে ২০১৩ সালে বুট আর গ্লাভস জোড়া তুলে রাখার ঘোষণা দেন তিনি। তার রেকর্ডটা ভাঙার সুযোগ ছিল কাহিলের। কিন্তু রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে অবসরের ঘোষণা দেন এই কিংবদন্তি।

অস্ট্রেলিয়া:

ফিফা র‌্যাঙ্কিং: ৩৮

গ্রুপ ‘ডি’: অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, তিউনিশিয়া, ডেনমার্ক

বিশ্বকাপ রেকর্ড:

১৯৩০-৬২: ফিফার সদস্য নয়
১৯৬৬-৬০: বাছাই
১৯৭৪: গ্রুপপর্ব
১৯৭৮-২০০২: বাছাই

২০০৬: শেষ ১৬
২০১০-১৮: গ্রুপপর্ব

গ্রুপপর্বের সূচি:

২২ নভেম্বর: ফ্রান্স-অস্ট্রেলিয়া, রাত ১টা
২৬ নভেম্বর: তিউনিসিয়া-অস্ট্রেলিয়া, বিকেল ৪টা
৩০ নভেম্বর: অস্ট্রেলিয়া-ডেনমার্ক, রাত ৯টা