চীন সফরে যাচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ আজ চীন সফরে যাচ্ছেন। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতারোহন নিশ্চিত হবার পর শোলজ হতে চলেছেন তার সঙ্গে সাক্ষাতকারী প্রথম পশ্চিমা নেতা। প্রায় দুই বছর কোভিড-জনিত বিধিনিষেধের পর বেইজিং সফরকারী প্রথম ইউরোপীয় নেতাও তিনি। জার্মানির বড় একটি সরকারি ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল নিয়ে শোলজ এ সফরে যাচ্ছেন।

চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এশিয়ায় অবস্থান করবেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ

জার্মান প্রতিনিধিদলে বার্লিনের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রয়েছেন সিমেন্স, অ্যাডিডাস, ভক্সওয়াগনের মতো শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির সিইওরা। চীন সফরশেষে ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর এবং সবশেষে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন জার্মান সরকারপ্রধান।

একটি সূত্র জানিয়েছে, ইউরোপে নজিরবিহীন জ্বালানি ও বিদ্যুত সংকটের মধ্যে কর রেয়াত ও জ্বালানি সরবরাহসহ নানা প্রণোদনার মাধ্যমে মহাদেশীয় কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম সরিয়ে নিতে উৎসাহিত করছে মার্কিন সরকার। শোলজ চাইছেন জার্মান কোম্পানিগুলো এশীয় সরবরাহ চেইনের সঙ্গে মজবুত সংযোগ গড়ে তুলুক।

পলিটিকো জানিয়েছে, ইউক্রেন ইস্যুতে মস্কোর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান না নেওয়ায় বেইজিংয়ের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা নাখোশ। এ অবস্থায় শোলজের বেইজিং সফরকে ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলসে অনেক ভালোভাবে নিচ্ছেন না। আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ইউরোপের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান জানান দিতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ জার্মান চ্যান্সেলরকে একসঙ্গে বেইজিং সফরের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। শোলজ সে প্রস্তাব নাকচ করেছেন।

বেইজিং সফরের পক্ষে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করে আজ বৃহস্পতিবার পলিটিকোর ইউরোপ সংস্করণে ও জার্মান দৈনিক ফ্রাঙ্কফুর্টার আলেমান জাইতুংয়ে একটি নিবন্ধ লেখেছেন ওলাফ শোলজ। এতে তিনি চীনের সঙ্গে যোগাযোগ ও সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার গুরুত্ব, বেইজিং সম্পর্কে বিভিন্ন ইস্যুতে ইউরোপের উদ্বেগ তুলে ধরার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকে পরোক্ষভাবে কিছুটা খোঁচা দিয়েছেন।

চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সংযোগ কাটছাঁট করতে মিত্রদের প্রতি ওয়াশিংটনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চাপের দিকে ইঙ্গিত করে শোলজ লেখেছেন, চীনের অর্থনৈতিক উত্থান মানে যে দেশটিকে এড়িয়ে চলতে হবে এমন ভাবনার পেছনে কোনো যুক্তি নেই। তিনি বলেন, আমরা চীনের সঙ্গে সংযোগ ছিন্ন করতে চাই না। আবার চীনের উপর অতি নির্ভরশীল হতেও পারব না।

তিনি আরও লেখেন, যেখানে আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ আছে সেখানে জার্মানি চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চাইবে। তবে সেজন্য বিতর্কের বিষয়গুলোকে আমরা অবজ্ঞা করব না। আমার পূর্বসুরী তিন বছর আগে চীন সফর করেন। এই সময়ে অনেক পরিবর্তন ঘটে গেছে। অনেক চ্যালেঞ্জ বেড়ে গেছে। যেহেতু যেনতেনভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া আর সম্ভব নয়, তাই আমি চীন সফর করছি।