আজ জাতীয় সংবিধান দিবস

আজ জাতীয় সংবিধান দিবস। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে গৃহীত হয়েছিল বাংলাদেশের সংবিধান। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয় সেটি। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছে সংবিধান দিবস। এখন থেকে প্রতি বছর ৪ নভেম্বর 'জাতীয় সংবিধান দিবস' হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হবে। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সরকার দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।

বাংলাদেশের সংবিধান শুধু দেশে সর্বোচ্চ আইনই নয়; বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে এই সংবিধানে। দেশ হবে প্রজাতান্ত্রিক, জনগণ হবে সব ক্ষমতার উৎস, গণতন্ত্র হবে দেশের প্রশাসনিক ভিত্তি এবং বিচার বিভাগ থাকবে স্বাধীন।

জনগণ সব ক্ষমতার উৎস হলেও আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে দেশ। সব আইনের মূল থাকবে সংবিধান। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি গ্রহণ করা হয়েছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণপরিষদে বলেছিলেন, শহীদের রক্তে লিখিত এই সংবিধান, সমস্ত জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক।

সংবিধান প্রণয়নের জন্য ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। একই বছরের ১৭ এপ্রিল থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে এই কমিটি। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য সভা এবং সংগৃহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করে কমিটি। এরপর ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করেন ড. কামাল হোসেন। এরপর ৪ নভেম্বর গণপরিষদে সংবিধান গৃহিত হয়।

বাংলাদেশের সংবিধানে ১১টি ভাগে ১৫৩টি অনুচ্ছেদ বা ধারা রয়েছে। ১৯৭২ সালে মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং পরে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই সংবিধান বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। এ পর্যন্ত সর্বমোট ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে বাংলাদেশের সংবিধান।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পৃথক বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, জাতীয় সংবিধান দিবস বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও স্মরণীয় দিন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৪ নভেম্বরকে ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ ঘোষণা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। জাতীয় সংবিধান দিবস ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাস ও সংবিধানের চেতনা ছড়িয়ে দিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।