যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বরিশাল, সীমাহীন জনদুর্ভোগ

বরিশালে আগামীকাল শনিবার বিএনপির গণসমাবেশ। এই সমাবেশের আগেই বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে বরিশালে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাস, থ্রি হুইলার, মাইক্রোবাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় সারা দেশ থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে জেলাটি । ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

বরিশালে যানবাহন বন্ধ থাকায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে

নগরীতে কোনও বাস চলছে না। মহাসড়কেও নেই কোনো যানবাহন। অনেক মানুষ ভ্যান ও রিকশায় গন্তব্যে যাচ্ছেন। তবে রিকশা ও ভ্যানের ভাড়া স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ নেওয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যে যাচ্ছেন।

শনিবার, ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ হবে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে। অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়টি বুঝতে পেরে বরিশালের ছয় জেলা ও ৪২ উপজেলা থেকে আগেভাগেই বিএনপির নেতাকর্মীরা নগরীতে অবস্থান নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে আসছেন নেতাকর্মীরা।

এদিকে, আজ সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ সাত রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঘোষণা করা হয় বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী বিলাসবহুল চারটি লঞ্চ। একইভাবে ঢাকার সদরঘাট থেকেও বরিশালগামী লঞ্চ না ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা কোনো কথা বলতে চাননি।

বরিশাল নগরীর সঙ্গে যুক্ত একাধিক খেয়াঘাট থেকেও পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেয়াঘাট চরকাউয়ার নৌকার মাঝিরা জানান, এক আওয়ামী লীগ নেতার আত্মীয়ের বিয়ে থাকায় শুধু তাদের স্বজনদেরই পার করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ পারাপারের কোনো নির্দেশ নেই।

বরিশাল থেকে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীবাহী পরিবহন বন্ধ। বরিশাল জেলায় চলাচল করছে না কোনো ধরনের থ্রি হুইলার। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে আসা শামীম জানান, তিনি সিলেটে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। গত রাতে খবর পেয়েছেন তার মা অসুস্থ। তাকে দেখার জন্য বিভিন্ন যানবাহনে বরিশাল নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আসতে পেরেছেন; এরপর আর যেতে পারছেন না। তাকে কুয়াকাটায় যেতে হবে। তবে তিনি কোনো গাড়ি পাচ্ছেন না।

গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে যানবাহন বন্ধ করে দেওয়ার শঙ্কায় গত ২ নভেম্বর থেকে সমাবেশস্থলে আসা শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। কেউ মঞ্চের পাশে আবার কেউ তাদের ভাড়া করে আনা গাড়িতে অবস্থান করছেন। এরইমধ্যে তাদের বিভিন্ন ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

বরগুনা থেকে এসেছেন সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মনি। তিনি বলেন, নেতাকর্মীরা কেউ হেঁটে, কেউ সাইকেলে আগেভাগেই সমাবেশস্থলে চলে এসেছেন। শুধু নেতাকর্মীরা নয়, এবার তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সাধারণ মানুষও। তাদের এই গণসমাবেশ হবে সর্ববৃহৎ সমাবেশ। এখান থেকে শুরু হবে সরকার পতনের আন্দোলন।