গাড়িতে বিড়াল রেখে শিক্ষক দম্পতির মৃত্যুর কারণ খুঁজছে পুলিশ

গাজীপুরে প্রাইভেটকারে শিক্ষক দম্পতির মৃত্যু ‘এসির বিষাক্ত গ্যাস’এর কারণে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত পুলিশ। পুলিশ বলেছে, এ ধারণা নিশ্চিত হতে ওই গাড়িতে একটি বিড়াল রেখে এসি ছেড়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, আধাঘণ্টার মধ্যে বিড়ালটি মারা গেছে।

শিক্ষক জিয়াউর রহমান ও জলি আক্তার

গত ১৮ আগস্ট ভোরে গাজীপুরের খাইলকুর এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে দুইজনের মৃতদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে তাদের উদ্ধার করে জানা যায় তারা হলেন শিক্ষক দম্পতি জিয়াউর রহমান (৫১) ও মাহমুদা আক্তার (৩৫)।

জিয়াউর রহমান ছিলেন টঙ্গীর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং মাহমুদা আক্তার ছিলেন টঙ্গীর আমজাদ আলী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

তাদের কর্মস্থল পাশাপাশি হওয়ায় তারা একসাথে নিজেদের প্রাইভেটকারে যাতায়াত করতেন। জিয়াউর রহমান নিজেই গাড়ি চালাতেন। ১৭ আগস্ট সকালে তারা একইভাবে গাজীপুরের কামাড়জুরী এলাকার বাসা থেকে বের হন। কিন্তু তারা আর ফেরেননি। পরদিন গাজীপুরের খাইলকুর এলাকায় প্রাইভেটকারে তাদের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।

ঘটনার পর জিয়াউর রহমানের ভাই শিক্ষক আতিকুর রহমান অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আড়াই মাস ধরে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি, র‌্যাব।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাদির বলেন, ‘আমরা মোটামুটি নিশ্চিত এসির বিষাক্ত গ্যাস থেকে তাদের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে একটি পরীক্ষাও করা হয়েছিল। ওই গাড়ির এসি ছেড়ে ভেতরে একটি বিড়াল রেখে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে দেখা যায় ১০ থেকে ১২ মিনিটের মধ্যে বিড়ালটি দুর্বল হয়ে পড়ে। আর ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে বিড়ালটি মারা যায়।’

তবে পুলিশের এই তদন্তের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন জিয়াউর রহমানের ভাই আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মারা যাওয়ার আসল কারণ খুঁজে না পেয়ে আড়াই মাস পর পুলিশ মনগড়া ব্যাখ্যা দিচ্ছে। এই বিড়াল ব্যাখ্যার কোনো ভিত্তি নেই। এই যুক্তি মানতে পারছি না।’

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান মো. শাফি মোহাইমেন বলেন, ‘এখনো ভিসেরা প্রতিবেদন আসেনি। তাই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও দেওয়া হয়নি। তাই সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

ওই হত্যা মামলায় বিড়াল দিয়ে পরীক্ষার বিষয়ে গাজীপুরের গাছা থানার ওসি ইব্রাহীম হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়েএখনো আমরা বিস্তারিত প্রকাশ করতে পারছি না। আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি আছে, সেগুলোর ফলাফল পাওয়া গেলে আমরা আরও নিশ্চিত হতে পারব।’