চীন-জার্মানি বৃহত্তর সহযোগিতা চান শি জিনপিং

চীন সফরে আছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ। বেইজিংয়ে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে শি জিনপিং চীন-জার্মানির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে তারা বৈঠকে মিলিত হন। দ্য স্ট্রেইটস টাইমের খবর।

ওলাফ স্কোলজ ও শি জিনপিং

বৈঠকে শি জিনপিং বলেন, প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে চীন এবং জার্মানির উচিত বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নে আরও অবদান রাখা। বিশ্ব রাজনীতির পরিবর্তন ও বিশৃঙ্খলার সময়ে একসাথে কাজ করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া প্রকাশিত বৈঠকের একটি বিবৃতি অনুসারে, উভয় দেশেরই উচিত যৌথভাবে পক্ষ-বিপক্ষ সংঘর্ষ এবং আদর্শগত হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করা। স্কোলজ চীনে একদিনের সফরে রয়েছেন। তিনি চীনা নেতাকে বলেন, জার্মানি দ্বৈতকরণের বিরুদ্ধে এবং চীনের সাথে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা আরও গভীর করতে ইচ্ছুক।

চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সাথে একটি পৃথক বৈঠক করেন জার্মান নেতা। এ সময় দুই দেশের মধ্যে সমান বাজার সৃষ্টির জন্য চীনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন স্কোলজ।

বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আরও বলেন, বেইজিং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডিজিটালাইজেশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বার্লিনের সাথে তার সহযোগিতা প্রসারিত করতে ইচ্ছুক।

বৈঠকটি এমন সময় হলো, যখন বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের মূল প্রযুক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া সময়টি এমন যখন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ওয়াশিংটন চীনের ওপর তাদের অর্থনৈতিক নির্ভরতা সীমিত করার কথা বিবেচনা করছে। ফলে জার্মান চ্যান্সেলরের সফর বিশ্লেষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্ব পেয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার সাথে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ইউরোপে চীনের উদ্দেশ্য নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এমন সময় স্কোলজ বেইজিংয়ের সাথে অংশীদারিত্ব প্রসারিত করার আহ্বান জানালেন। বার্লিন চীনকে মূলত একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে গণ্য করে। বিশেষ করে জার্মানির গাড়ি নির্মাতাদের জন্য চীনের বাজার জমজমাট বলা যায়।

খবরে বলা হয়, স্কোলজ তার সফরের আগে হামবুর্গ বন্দরের একটি টার্মিনালে চীনা শিপিং ফার্ম কস্কোর সাথে একটি চুক্তি অনুমোদন করেন। তার সফরের আগে ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালজেমেইন জেইতুং এবং পলিটিকোতে একটি মন্তব্য কলাম প্রকাশিত হয়। যাতে জার্মান-চীন সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

লন্ডনের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের চায়না ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক স্টিভ সাং বলেন, এই সফরে দেখা গেছে জার্মান চ্যান্সেলর স্পষ্টতই অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থকে সামনে রেখেই কথা বলেছেন। চীনের সঙ্গে সম্পর্কের সুবিধা অবশ্যই জার্মানিকে গ্রহণ করা উচিত, কারণ জার্মানি এখন অর্থনৈতিকভাবে চাপের মুখে রয়েছে।