প্রধানমন্ত্রী: রিজার্ভের টাকায় ৫ মাস চলবে, এটা যথেষ্ট

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে রিজার্ভে যে টাকা আছে তা দিয়ে অন্তত পাঁচ মাসের খাদ্য আমদানি করা যাবে। কোনো দেশে যদি তিন মাসের খাদ্য আমদানির মতো রিজার্ভ থাকে তবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সেটাকে যথেষ্ট হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। এটাই বাস্তবতা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

৬ নভেম্বর, রোববার জাতীয় সংসদে সমাপনী ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। যে যার জায়গা থেকে এ বিষয়ে মনযোগ দিতে হবে। সাথে সাথে আমদানি পণ্যে নির্ভরতা কমিয়ে রপ্তানি বাড়াতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে মন্দাবস্থা চলছে, এর মধ্যেও দেশের অর্থনীতি ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এজন্য দেশের মানুষকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ও পানির ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

দেশের মানুষকে যেকোনো অবস্থার জন্য তৈরি থাকার আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উন্নত দেশগুলোতে রেশনিং চলছে এবং শীতে বিদ্যুত সাশ্রয়ে নতুন পরিকল্পনা করছে। আমাদেরকেও সাশ্রয়ী হতে হবে। যেকোনো অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের বিলাসী জিনিস আমদানি কমাতে হবে। এর ওপর ট্যাক্সটাও বাড়িয়ে দিতে হবে।

বিদেশি ঋণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের মোট সরকারি ঋণ হচ্ছে জিডিপির ৩৬ শতাংশ। আর বৈদেশিক ঋণ হলো জিডিপির ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর কখনো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হইনি। আমরা কখনো ঋণখেলাপি হইনি। কখনো হবো না ইনশাআল্লাহ।

বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ তার থেকে আলাদা নয়। বাংলাদেশকেও সে ফল ভোগ করতে হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে। মূদ্রার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সেটা আরও ভয়াবহ হয়েছে। তাই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো যারা খাদ্য, জ্বালানি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আমদানি করতে হয়, তারাও সংকটে পড়েছে। তবে এই সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা আওয়ামী লীগ সরকার করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালের সরকার গঠনের সময় আমরা রিজার্ভ পেয়েছি ২ দশমিক ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আওয়ামী লীগ সরকার সেটাকে প্রায় ৪ বিলিয়নের কাছাকাছিতে উন্নীত করেছে। এরপর যখন ২০০৯ সালে আবার ক্ষমতায় আসি তখন রিজার্ভ ছিল ৫ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৪-তে রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১৯ এ ৩২ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২০ এ রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২১ এ রিজার্ভ দাঁড়ায় ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এবং ২০২২ সালের ৩০ জুন তারিখে রিজার্ভ ছিল ৪১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে বর্তমান রিজার্ভ সামান্য কমে গিয়ে ৩ নভেম্বর তারিখেও হিসেব অনুযায়ী ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসে দঁড়িয়েছে।’