আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ডেঙ্গুতে প্রাণহানি বাড়ছেই

দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরো সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় এসব প্রাণহানি ঘটেছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু কেড়ে নিলো ১৭৭ জনের প্রাণ। এর আগে কোনো বছর ডেঙ্গুতে দেশে এত মৃত্যু ঘটেনি।

ডেঙ্গুতে প্রাণহানি এবার আগের সব বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, রোববার সকাল আটটা থেকে আজ সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭৫ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকায় ৪৯৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ৩৭৮ জন রয়েছেন।

চলতি মাস নভেম্বরের প্রথম সাত দিনে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৩৬ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৯৫৮ জন। গত মাস অক্টোবরেও ২১ হাজার ৯৩২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে মারা গেছেন ৮৬ জন।

এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ৪৩ হাজার ৯৮২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৪০ হাজার ৫৩৫ রোগী। তবে মারা গেছেন ১৭৭ জন। এই প্রাণহানি দেশের ইতিহাসে যে কোনো বছরের তুলনায় রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এর আগে ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল ভয়াবহ। ওই বছর সর্বোচ্চ ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন আক্রান্ত হন ডেঙ্গুতে। তবে মৃত্যু হয়েছিল ১৬৪ জনের।

করোনা মহামারি শুরুর পর ২০২০ সালে কিছুটা কম ছিল ডেঙ্গুর প্রকোপ। ওই বছর দেশে দেড় হাজার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও মাত্র চারজনের মৃত্যু হয়।

গত ২০২১ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৮ হাজার ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তার মধ্যে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের। তবে বছর পুরো না হতেই এবার মৃত্যু ঘটেছে আগের যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে এত মৃত্যু প্রসঙ্গে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ২০১৯ সালের তুলনায় এবার ডেঙ্গুরোগী সংখ্যায় কম। তবে চলতি বছর রোগটির তীব্রতা ও ভয়াবহতা অনেক বেশি।

তিনি আরো বলেন, করোনার কারণে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। এজন্য ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে শরীরে জটিলতা বেশি তৈরি হচ্ছে। ফলে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ও মৃত্যু বেশি দেখা যাচ্ছে।