চুরি যাওয়া ১৯২ শিল্পকর্ম পাকিস্তানকে ফেরত দিলো যুক্তরাষ্ট্র

ভারতীয়-আমেরিকান একজন আর্ট ডিলারের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড তদন্তের পর চুরি যাওয়া ১৯২টি পুরাকীর্তি পাকিস্তানকে ফেরত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই শিল্পকর্মগুলোর দাম ৩.৪ মিলিয়ন বা ৩৪ লাখ ডলার। ফেরত পাওয়া আইটেমগুলোর মধ্যে রয়েছে- গান্ধারের আলোকিত বুদ্ধমূর্তি এবং প্রায় ৫ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মেহেরগড় পুতুল। ভয়েস অব আমেরিকার খবর।

চুরি যাওয়া ১৯২ শিল্পকর্ম পাকিস্তানকে ফেরত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারের প্রাদেশিক প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ গবেষক বখত মুহম্মদ ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, এই বস্তুগুলো গান্ধার বৌদ্ধ সভ্যতার অন্তর্গত। এতে সাধারণত গ্রিক, স্থানীয় প্রভাব এবং বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই কুশান যুগের বস্তু।

তিনি বলেন, কুশান রাজবংশের যারা খ্রিস্টীয় যুগের প্রথম তিন শতাব্দিতে উত্তর ভারতীয় উপমহাদেশ, আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার কিছু অংশ শাসন করেছিল, এই জিনিসগুলো সেই সময়ের হবে।

নিউইয়র্কে পাচার করার আগে পাকিস্তানের একটি নিওলিথিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান থেকে পুরাকীর্তিগুলি লুট করা হয়েছিল। চলতি বছর মার্কিন কর্তৃপক্ষ সেগুলো জব্দ করে। এর আগ পর্যন্ত আর্ট অফ দ্য পাস্টের এজেন্টদের ভাড়া করা স্টোরেজ ইউনিটে সেগুলো রাখা হয়েছিল। পাকিস্তানের মেহেরগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটি ১৯৭৪ সালে আবিষ্কৃত হয় এবং পরবর্তীকালে স্থানটি লুটপাটের শিকার হয়।

নিউইয়র্কের ম্যানহাটন জেলা অ্যাটর্নির অফিস ঘোষণা করেছে, সুভাষ কাপুর নামে এক ভারতীয়র কাছ থেকে ১৮৭টি নিদর্শন উদ্ধার করা হয়েছে, যা তাকে ‌'বিশ্বের অন্যতম প্রত্নসম্পদ পাচারকারী' হিসাবে চিহ্নিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কাপুর এবং তার সহযোগীরা লুট করা পুরাকীর্তি ম্যানহাটনে পাচার করেছিল এবং কাপুর তার গ্যালারি ‌'আর্ট অফ দ্য পাস্টের' মাধ্যমে সেগুলো বিক্রি করেছিল।

ম্যানহাটনের জেলা অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ বলেন, আমরা কাপুর এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাব। মার্কিন বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতীয় পুরাকীর্তি বিক্রি করার অভিযোগে কাপুরসহ তার পাঁচ সহযোগী ভারতের কারাগারে আটক ছিল। গত সপ্তাহে ভারতের একটি বিশেষ আদালত এই ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দিয়েছে। এতে কাপুরের ১৩ বছরের জেলদণ্ড হয়েছে।

ম্যানহাটনের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস জানিয়েছে, ২০০১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কাপুর ও তার নেটওয়ার্ক ২৫শর বেশি শিল্পকর্ম পাচার করার সাথে জড়িত। এসব শিল্পকর্মের মূল্য আনুমানিক ১৪৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি।