জেলেনস্কি: খেরসন এখন ‘আমাদের'

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি লিখেছেন, খেরসন এখন আমাদের। রাশিয়ার সেনাবাহিনী অধিকৃত অঞ্চল থেকে পুরোপুরি সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর গতকাল শুক্রবার জেলেনস্কি এক স্ট্যাটাসে এ কথা লিখেছেন। খবর আরব নিউজ ও হিন্দুস্তান টাইমস।

জেলেনস্কি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে একটি ইউক্রেনীয় পতাকার ইমোজি ও ভিডিও ফুটেজের সাথে জেলেনস্কি লেখেন, আমাদের মানুষ। আমাদের। খেরসন। যুক্ত করা ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা শহরের বাসিন্দাদের সাথে জড়ো হচ্ছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া একমাত্র আঞ্চলিক রাজধানী হিসেবে খেরসন দখল করেছিল। সম্প্রতি ইউক্রেনের সেনাদের পাল্টা হামলার প্রেক্ষিতে অঞ্চলটি ছেড়ে যেতে থাকে রুশ বাহিনী। গতকাল সেটি পুরোপুরি রুশ সেনা মুক্ত হয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে ইউক্রেনীয় সেনাদের আগমনকে স্বাগত জানায়।

খেরসনে আনন্দ উল্লাস

রাশিয়া দাবি করছে, কোনও ধরনের সৈন্যক্ষয় ছাড়াই তারা তাদের ৩০ হাজার সেনা প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু কিয়েভের দাবি, রাশিয়ার সেনারা দ্রুত পালানোর সময় তাদের ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেছে, অস্ত্র ফেলে দিয়েছে এবং তাড়াহুড়া করে পালানোর চেষ্টায় ডুবে মারা গেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও ফুটেজে কয়েক ডজন লোককে দক্ষিণ ইউক্রেনীয় শহরের কেন্দ্রীয় চত্বরে বিজয়ের স্লোগান দিতে দেখা গেছে। সেখানে ইউক্রেনীয় সেনারা জনগণের সাথে সেলফি তুলেছে। দুজন পুরুষ একজন নারী সৈনিককে তাদের কাঁধে তুলে তাকে বাতাসে ছুড়ে মারে। কিছু বাসিন্দা ইউক্রেনীয় পতাকায় নিজেদের মুড়ে ফেলে। কেউ কেউ কাঁদতে থাকে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, খেরসন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে। অবশিষ্ট রাশিয়ান সেনাদের কিয়েভের বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাশিয়ান বাহিনীর সরে যাওয়ার সাথে ইউক্রেনীয় বাহিনী এগিয়ে আসে। পরে গ্রামবাসীরা আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে এবং অশ্রুসজল চোখে বর্ণনা করে, কীভাবে রুশ সেনারা তাদের চারপাশের লোকজনকে হত্যা করেছে ও বাড়িঘর লুট করেছে। রুশ সৈন্যরা খালি বাড়িতেও ভাঙচুর চালায় এবং তাদের আসবাবপত্র, টেলিভিশন, চুলা, রেফ্রিজারেটর ইত্যাদি জিনিস সরিয়ে নিয়ে যায়।

তবে অনেকের কাছেই এখনো পর্যন্ত রাশিয়ার এই সরে যাওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। যুদ্ধের মধ্যেও খেরসনের থেকে যাওয়া ৪৩ বছর বয়সী সের্হি কালকো রাশিয়ান সরে যাওয়ার বিষয়টিতে খুবই হতবাক হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ওরা চুপচাপ চলে গেল। এমনকি তারা একে অপরের সাথেও কোনও কথা বলেনি।

খেরসনের ইউক্রেনের আঞ্চলিক কাউন্সিলের সদস্য সের্হি খলান বলেছেন, আঞ্চলিক রাজধানী এখন প্রায় পুরোপুরি ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। তবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের মুখপাত্র নাটালিয়া হুমেনিউক বলেছেন, বেসামরিক পোশাকে রাশিয়ান সেনাদের দ্বারা নাশকতামূলক অভিযানের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।