কাতারে আটক ভারতীয়দের আট বছর সাজা হতে পারে

ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে কাতারে আটক ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত আট কর্মকর্তার আট বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। কাতারের কর্মকর্তাদের বরাতে পাকিস্তানের কয়েকটি সূত্র এ দাবি করেছে। যদিও কাতারের কর্মকর্তারা সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে কিছু বলছেন না। খবর জেরুজালেম পোস্ট।

গত ৩০ আগস্ট থেকে আটক ভারতীয়দের সলিটারি সেলে রাখা হয়েছে

ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ছয় কমান্ডারসহ আট কর্মকর্তাকে গত ৩০ আগস্ট আটক করে কাতারের পুলিশ। আটককৃতরা দাহরা টেকনোলজিস নামে কাতারের একটি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরামর্শক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ। ভারতীয় কর্মকর্তারা সেখানে কাজের সুবাদে কাতারের প্রতিরক্ষা ও সরঞ্জামাদি সংক্রান্ত স্পর্শকাতর তথ্য ইসরায়েলের কাছে পাচার করছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ইরানের সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ৭০ দিনের বেশি সময় ধরে আটক এসব ভারতীয়কে পরস্পরবিচ্ছিন্ন অবস্থায় সলিটারি সেলে রাখা হয়েছে। কাতারে কেবলমাত্র নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত অপরাধীদের এমন সেলে রাখা হয়ে থাকে। কাতারের কর্মকর্তারা আটক ভারতীয়দের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে তেমন কিছু বলছেন না।

ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে বিশেষ সম্মাননাপ্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত নৌ কমান্ডার পুর্ণেন্দু তিওয়ারি কোম্পানির এমডি পদে দায়িত্বপালন করছিলেন। তিনি ছাড়াও আটক ভারতীয়দের রয়েছেন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার নবতেজ সিং গিল, কমান্ডার বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা, কমান্ডার সুগুণাকর পাকালা, কমান্ডার সঞ্জীব গুপ্ত, কমান্ডার অমিত নাগপাল, ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ট ও রাগেশ গোপাকুমার।

কাতারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের কিছু সূত্র বলছে, অভিযোগ প্রমাণ হলে ভারতীয় নাগরিকদের আট বছর সাজা হতে পারে। পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাতার এসব ভারতীয়কে আটক করে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয়দের আটকের সঙ্গে গুপ্তচরবৃত্তির সংযোগ রয়েছে এমন দাবি ভিত্তিহীন বলে ওয়াকিবহাল সূত্র জানিয়েছে। পাকিস্তানের কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে জল ঘোলা করার চেষ্টা করছে। কাতারের কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করছেন না।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, আট ভারতীয়কে আটকের পর দাহরা কোম্পানির ওয়েবসাইট ও লিঙ্কডইন পেজ মুছে ফেলা হয়েছে। কোম্পানিটির ওয়েবসাইটে ক্লিক করলে এখন ‘আন্ডার মেইনটেন্যান্স’ লেখা একটি পেজ আসছে। আটক ভারতীয়দের মুক্তির চেষ্টা চালাতে গত মাসে দিল্লী থেকে উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তাকে কাতার পাঠানো হয়।

ভারতের সোশ্যাল মিডিয়া ইউজাররা আটককৃতদের মুক্তির চেষ্টা জোরদার করতে ভারত সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়ে বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দন বাগচী গত সপ্তাহে এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, কাতারে ভারতীয় দূতাবাস আটককৃতদের দ্রুত ছাড়িয়ে আনতে এবং তাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। আপাতত এর চেয়ে বেশি কিছু আমি বলব না।