দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ। কাতারে বসতে যাচ্ছে ফুটবল মহাযজ্ঞের ২২তম আসর। ফুটবল উৎসবের বানে ভেসে যাওয়ার আগে একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক আগের একটি প্রতিযোগিতার দিকে।

1986ম্যারাডোনার আলোয় আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় বিশ্বকাপ

ডিয়েগো ম্যারাডোনার বিশ্বকাপ বললে ভুল হবে না মেক্সিকোর আসরকে। ১৯৮৬ সালের ফুটবল মহাযজ্ঞে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের জাদুকরী নৈপুণ্যে মুগ্ধ হয়েছিল গোটা বিশ্ব। বলতে গেলে একাই তিনি জিতিয়েছেন লাতিন আমেরিকার দেশটির দ্বিতীয় শিরোপা। বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে নিজে ৫ গোল করার পাশাপাশি ম্যারাডোনা সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছিলেন আরও ৫ গোল।

৩১ মে থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত হওয়া মেক্সিকোর এই আসরটি আসলে হওয়ার কথা ছিল কলম্বিয়ায়। কিন্তু লাতিন দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তারা আয়োজকের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপর ফিফা ফুটবল মহাযজ্ঞের আয়োজকের দায়িত্ব দেয় মেক্সিকোকে।

মেক্সিকো সিটির ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তোলে আর্জেন্টিনা। ২৫ বছর বয়সী অধিনায়ক ম্যারাডোনার হাত ধরেই এসেছে শিরোপাটি। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ের পথে দুই গোলই করেছিলেন ম্যারাডোনা। যার একটি ‘হ্যান্ড অব গড’, অন্যটি ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরি’। এরপর বেলজিয়ামের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও ম্যারাডোনা করেন জোড়া লক্ষ্যভেদ। সেই পারফরম্যান্সের ধারায় ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে ঘায়েল। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপটা তাই ম্যারাডোনা ও আর্জেন্টিনার।

প্রথম হাফে কোনও গোল হয়নি। ম্যারাডোনা বেশ কয়বার বল নিয়ে ছন্দ দেখালেও গোলমুখ খুলতে পারছিলেন না। অসাধারণ উত্তেজনার ম্যাচের সাধারণ প্রথমার্ধ। তবে কে ভেবেছিল, এই সাধারণত্বকে পুষিয়ে দিয়ে ম্যাচটি পরে ঢুকে যাবে ইতিহাসের পাতায়!

দ্বিতীয়ার্ধের ৫ মিনিটের মাথায় বল নিয়ে এগিয়ে গেলেন ম্যারাডোনা। বক্সের বাইরে  দাঁড়ানো ভালদানো কে পাস দিয়ে গুলির বেগে ডিফেন্ডারদের ভেদ করে ঢুকে গেলেন বক্সে। ভালদানোর বাড়ানো বল ডিফেন্সে বাঁধা পেয়ে উঠে গেল আকাশে, আর ম্যারাডোনা হেড করলেন ‘হাত’ দিয়ে। বল জালে জড়াতেই ম্যারাডোনা দৌড়ে গেলেন দর্শক সারির দিকে। ইংলিশদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও কোনও লাভ হলো না । রেফারি বাজিয়ে দিলেন গোলের বাঁশি।

গোলটা যে মাথার নয় হাতের ছিল সেটা পরে হাত দিয়ে গ্যালারির উদ্দেশ্যে বুঝিয়ে দিলেন ম্যারাডোনা স্বয়ং! কলঙ্কিত গোল বলেই কিনা, কলঙ্কটা মুছতে তিনি সময় নিলেন মাত্র ৫ মিনিট। ঐ গোলের মহিমা বর্ণনা করতে শত শত পৃষ্ঠা লেখা হয়েছে, অনেক কালি খরচ হয়েছে। কিন্তু তবু তার সৌন্দর্য লিখে প্রকাশ করা যায়নি। তখন হয়তো অন্য কোন গ্রহ হতে অন্য কিছু শক্তি ভর করেছিল আর্জেন্টাইনদের ফুটবল ঈশ্বরের উপর। নইলে মাত্র ৪ সেকেন্ডের মধ্যে মাঝমাঠ থেকে কিভাবে ৭ জনকে কাটিয়ে একজন মানুষ গোল দিতে পারেন? গোলটা এত দ্রুত হয়ে গিয়েছিল যে, আর্জেন্টাইন প্লেয়াররাও বুঝতে পারেন নি ওটা গোল! হতভম্ব ইংলিশরা এরপর আর খেলাতেই ফিরতে পারেনি। ৮১ মিনিটে গ্যারি লিনেকার হেডে একটি গোল ফিরিয়ে দিলেও কখনোই মনে হয়নি ইংলিশরা এই ম্যাচ জিততে পারবে।

মাঝ মাঠ থেকে ডি বক্সের ভেতর পর্যন্ত মোট ছয়জনকে পরাস্ত করে ইংল্যান্ডের জালে বল পাঠান ম্যারাডোনা। তাতেই অমরত্ব। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই জয়ের পর আর্জেন্টিনাকে আর থামানো যায়নি, থামানো যায়নি ম্যারাডোনাকে। ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে ৩–২ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনা জেতে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর, নিজেদের দ্বিতীয়।

একনজরে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ

স্বাগতিক:মেক্সিকো
চ্যাম্পিয়ন: আর্জেন্টিনা
রানার্সআপ: পশ্চিম জার্মানি
মোট ম্যাচ: ৫২
মোট গোল: ১৩২

গোল গড়: ২.৫৪
সর্বোচ্চ গোলদাতা: গ্যারি লিনেকার (ইংল্যান্ড -৬ গোল)
সেরা খেলোয়াড়: দিয়েগো ম্যারাডোনা (আর্জেন্টিনা)
মোট দর্শক: ২৩৯৪০৩১
ম্যাচ প্রতি দর্শক: ৪৬০৩৯।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.