কাতার-চীন দীর্ঘতম গ্যাস চুক্তি

চীনের সাথে একটি ঐতিহাসিক গ্যাস চুক্তি সম্পাদন করেছে কাতার। চুক্তি অনুযায়ী চীনকে আগামী ২৭ বছর এলএনজি (লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) সরবরাহ করবে আরব দেশটি। ইউরোপ যখন তীব্র জ্বালানি সংকটে ভুগছে, ঠিক তখনই চীনের সাথে কাতারের এই চুক্তিতে অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের।

২৭ বছর চীনকে গ্যাস দেবে কাতার, চুক্তি সম্পন্ন

কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী ও কাতার এনার্জির প্রধান নির্বাহী সাদ শেরিদা আল কাবি সোমবার বলেছেন, কাতারের নতুন নর্থ ফিল্ড ইস্ট প্রকল্প থেকে বার্ষিক চার মিলিয়ন টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস চীনের পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড কেমিক্যাল কর্পোরেশনে (সিনোপেক) পাঠানো হবে। চুক্তিটি এলএনজি শিল্পের ইতিহাসে দীর্ঘতম চুক্তি।

খবরে বলা হচ্ছে, চীন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ এই অঞ্চলের দেশগুলো এখন কাতারের গ্যাসের প্রধান বাজার হয়ে উঠছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মূলত এই মেরুকরণ শুরু হয়েছে। কারণ ইউরোপ এখন জ্বালানি সংকটে ধুকছে। জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলোর কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির ব্যাপারে আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় চীনের দিকে ঝুঁকেছে কাতার।

নর্থ ফিল্ড তরলীকৃত গ্যাসক্ষেত্রে ২০২৭ সালের মধ্যে ৬০ শতাংশ উৎপাদন বাড়িয়ে প্রতিবছরে ১২৬ টনে উন্নীত করা হবে। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সিনিয়র ফেলো বেন কাহিল এএফপিকে বলেন, কাতারের প্রচুর এলএনজি রয়েছে। তারা চাহিদা সরবরাহের ব্যাপারেও খুবই আত্মবিশ্বাসী। এতে চীন ভাল একটি সুবিধা পেতে পারে।

বেন কাহিল মনে করেন, বর্তমান সংকটের সময়ে ক্রেতারা জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। সেক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি কাতার-চীন উভয়ের জন্য লাভজনক হবে। এই চুক্তি চীন-কাতারের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে। চীনের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে।

এদিকে চীন হলো প্রথম দেশ, যেটি নর্থ ফিল্ডের সাথে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে বসল। চীনা জ্বালানি কোম্পানির শীর্ষ কর্তারা নর্থ ফিল্ডের পুরো গ্যাস চেয়েছিলেন। শুরু থেকেই কোম্পানিটি মূলত পশ্চিমা প্রভাবশালী দেশগুলোর সাথে লেনদেন করে আসছিল।