আপনি পড়ছেন

কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের সাথে মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসির করমর্দনের ছবিগুলো তুরস্কের মানুষের মধ্যে ব্যাপক বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তুর্কি প্রেসিডেন্টের এ ধরনের পদক্ষেপের সমালোচনাও করেছে।

football brings together sisi and erdogan for the 1st time in 8 yearsকরমর্দনের ছবি

কিছুদিন আগেও এরদোয়ানের সবচেয়ে বড় শত্রু ছিলেন মিশরীয় প্রেসিডেন্ট সিসি। ২০১৩ সালে মিশরে সামরিক অভ্যুত্থানের সময় রাবা আল আদওয়া এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর মারাত্মক দমন-পীড়নের জন্য এরদোয়ান সিসিকে স্বৈরশাসক এবং খুনি হিসাবে আখ্যায়িত করেছিলেন। 

এদিকে এরদোয়ানের সাথে সিসির ঘনিষ্ঠ এই ছবি দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই এর সমালোচনা করেছেন। তারা রাবা হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন। মিশরের ইতিহাসের প্রথম এবং একমাত্র নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর তার সমর্থকরা রাবা স্কোয়ারে সমবেত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট এই হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হিসেবে ১ হাজারের বেশি নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করেছিল মিশরীয় সেনাবাহিনী। 

এরদোয়ান গণতন্ত্রপন্থী মিশরীয় প্রতিরোধের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। তিনি মুরসির সমর্থকও ছিলেন। ফলে তৎকালীন সেনাপ্রধান সিসির ব্যাপক সমালোচনা করেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মিশরের ক্ষমতা দখল করেন সিসি। তখন থেকেই তুরস্কের সাথে মিশরের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। ২০১৯ সালে কারাগারে মুরসির মৃত্যু হলে সিসিকে খুনি বলে উল্লেখ করেছিলেন এরদোয়ান।  

লন্ডনভিত্তিক অনলাইন নিউজ ওয়েবসাইট মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, কাতারের মধ্যস্থতায় দুই নেতার মধ্যে করমর্দনের ঘটনাটি ঘটেছে। কিন্তু তুর্কি মিডিয়ার খবর অনুসারে, সিসি এরদোয়ানের কাছে পৌঁছানোর জন্য আরেকটি উপায় অবলম্বন করেছিলেন, সেটি ছিল মিশরের বিখ্যাত আমের জুস।

তুরস্কের হুরিয়েত ডেইলি পত্রিকার কলামিস্ট আব্দুল কাদির সেলভি বুধবার লিখেছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে প্রায়ই মন্ত্রী এবং একেপির সিনিয়র কর্মকর্তাদের কাছে আমের জুস পরিবেশন করেছেন এরদোয়ান। অতিথিরা যখন আমের জুসের পেছনের গল্প সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তখন এরদোয়ান ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন সিসি মিশর সফরকারী তুর্কি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আমের জুস পাঠিয়েছেন।    

তুরস্ক এবং মিশরের মধ্য সম্পর্ক ঠিক করার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলে আসছে। কিন্তু কিছু ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে। লিবিয়ায় তুরস্ক এবং মিশরের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিযোগিতা ছাড়াও তুরস্কে মুসলিম ব্রাদারহুড নেতাদের উপস্থিতি মিশরের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরেও মিশরীয় কর্মকর্তারা আশা করছেন এই করমর্দনের মাধ্যমে এরদোয়ান সিসিকে মিশরের বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন।

আমের জুসের কূটনীতি ছাড়াও হঠাৎ করে সিসির ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ইউটার্নের বিষয়টি সমালোচনার জন্ম দিয়েছে তুরস্কে। দেশটির জাতীয়তাবাদী ইয়ি পার্টির নেতা মেরাল আকসেনার, সিসির সাথে এরদোয়ানের করমর্দনের বিষয়টি ভালোভাবে গ্রহণ করেননি। তিনি বলেছেন, রাবা হত্যাকাণ্ডের শিকার ১৭ বছর বয়সি নিহত আসমা আল বেলতাগির সাথে প্রতারণা করেছেন প্রেসিডেন্ট। তিনি কিশোরী মেয়েটির সম্মান বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, এরদোয়ান সে সময় আসমাকে প্রতিরোধের প্রতীক বলে উল্লেখ করেছিলেন।  

এদিকে তুরস্কের মিডিয়া জানিয়েছে, এরদোয়ানের সাথে সিসির করমর্দনের ছবি দেখে গ্রিসের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। আঙ্কারা এবং কায়রোর মধ্যে একটি সামুদ্রিক চুক্তির সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে আতঙ্কের মধ্যে আছে গ্রিস। করমর্দনের ছবি পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার একদিন পর গ্রিস পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ তিন মন্ত্রীকে কায়রোতে পাঠিয়েছে।

বুধবার এরদোয়ান ফের বলেছেন, তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে চান। সিরিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বাশারের সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তবে এরদোয়ানকে বশীভূত করার জন্য আসাদ কিসের জুস পাঠাবেন সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।

সূত্র: মিডল ইস্ট আই 

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.