রেকর্ড জয়ে ‘বাংলাওয়াশ’ এড়াল ভারত

ওয়ানডে ক্রিকেটে কোনো দল যখন চার শ’র গণ্ডি ছাড়িয়ে যায় তখন আসলে ম্যাচটার আর কিছু বাকি থাকে না। অনুমিতভাবেই সেই রানে চাপা পড়েছে বাংলাদেশ। আজ শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে ভারতের কাছে ২২৭ রানের বিরাট ব্যবধান হেরে গেছে টাইগাররা।

কোহলি-কিশানের জুটিটা দ্বিতীয় উইকেটে চতুর্থ সেরা জুটি

একদিনের ক্রিকেটে রানের হিসেবে এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে হার। এর আগে ২০০০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৩৩ রানের বিরাট ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা। তবে একদিনের ক্রিকেটে টেস্টখেলুড়ে কোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এটাই ভারতের সবচেয়ে বড় জয়।

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ওভারে আট উইকেটে ৪০৯ রানের পর্বত গড়ে ভারত। জবাবে দুশো রানও করতে পারেনি লিটন দাসের দল। বরং ম্যাচের ১৬ ওভার বাকি থাকতে ১৮২ রানে গুটিয়ে গেছে স্বাগতিক শিবির। ওয়ানডেতে দ্রুততম ডাবলসেঞ্চুরির সুবাদে অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন ইশান কিশান।

প্রথম দুই ম্যাচে মহানাটকীয় জয়ে সিরিজ আগেই নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচটা টাইগারদের জন্য ধবলধোলাইয়ের সুযোগ করে দেয়। তবে ভারতের জন্য ম্যাচটা ছিল মান বাঁচানোর। নিয়মরক্ষার এই ম্যাচে স্বাগতিকদের বোলারদের ওপর রীতিমতো ‘অত্যাচার’ করেছে ভারতীয়রা।

অথচ পঞ্চম ওভারে দারুণ একটা সূচনা পেয়েছিল বাংলাদেশ। দলীয় ১৫ রানে বিদায় নেন শিখর ধাওয়ান। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২৯০ রানের জুটি গড়েন কোহলি ও কিশান। জুটি গড়ার পথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক তুলে নেন কিশান। ১৩১ বলে ২৪টি চার ও ১০ ছক্কায় ২১০ রানে ফেরেন কিশান।

বাংলাদেশের এই উল্লাস ম্যাচ শেষে হতাশায় পরিণত হয়েছে

ওয়ানডে ক্রিকেটে এটা নবম দ্বিশতক। এর মধ্যে ছয়টিই হলো ভারতের। সর্বোচ্চ তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ২৬৪ রানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটাও তার দখলে। আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে কিশান যেন রোহিত হয়ে উঠেছিলেন! তিনি অবশ্য ছাড়িয়ে গেলেন সবাইকে। ১২৬ বলে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন কিশান। তিনি ভেঙেছেন ক্রিস গেইলের ১৩৮ বলে দ্বিশতকের রেকর্ড।

কিশানের বিদায়ে ভাঙে দুর্দান্ত জুটি। ৯১ বলে ১১৩ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে বিদায় নেন কোহলি। ১১টি চার ও দুই ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। এ ছাড়া ওয়াসিংটন সুন্দর ২৭ বলে ৩৭ এবং অক্ষর প্যাটেল ১৭ বলে কুড়ি রানে আউট হন। বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদ ও ইবাদত হোসেন।

প্রায় অবিশ্বাস্য লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম চার ওভারে বিনা উইকেটে ৩৩ রান তোলে বাংলাদেশ। এরপর নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট খোয়াতে থাকে টাইগাররা। আসা যাওয়ার মিছিলে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন সাকিব। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন ফেরেন ২৯ রানে। এ ছাড়া ইয়াসির আলি রাব্বি ২৫, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২০, তাসকিন ১৭* এবং মোস্তাফিজুর রহমান ১৩ রান করেন।

দশম উইকেটে তাসকিন ও মোস্তাফিজ ৩৩ রানের জুটি না গড়লে আরও বড় লজ্জায় পড়তে হতো বাংলাদেশকে। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন শার্দুল ঠাকুর। দুটি করে শিকার উমরান মালিক ও অক্ষর প্যাটেলের। ব্যাটাররা রানের যে পর্বত গড়েছেন সেটির ওপর দাঁড়িয়ে তারা যেন শুধুই নিয়মরক্ষার্থে বোলিং করে গেছেন!