পায়ু পথে সমস্যা শিশুর অপারেশন হলো জিহ্বায়

চরম অপেশাদারিত্বের নির্দশন রেখে এক চিকিৎসক দুই বছরের এক শিশুর জীবনকে সংশয়ের মুখে ফেলে দিয়েছেন। অথচ তিনি শিশুদের অভিভাবকদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, এতে কোনো সমস্যা হবে না। গতকাল শুক্রবার লক্ষ্মীপুর শহরের ডা. আউয়াল শিশু সার্জারি সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

ডা. আউয়াল শিশু সার্জারী সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতাল ও অভিযুক্ত চিকিৎসক

ওই হাসপাতালে পাইলসের সমস্যার জন্য আবদুর রহমান আরিয়ান নামে দুই বছরের এক শিশুকে নিয়ে আসেন তার অভিভাবকরা। তবে চিকিৎসকরা সে পাইলসের চিকিৎসা না করে ওই শিশুর জিহ্বা অপারেশন করেন। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু করলে একপর্যায়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জামাল সালেহ উদ্দীন আরজু তার ভুল স্বীকার করে বলেন, আমার ভুল হয়েছে। তবে এতে রোগীর কোনো সমস্যা হবে না।

জামাল সালেহ উদ্দীন আরজু চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও হাসপাতালের মালিক। অন্যদিকে ভুক্তভোগী আরিয়ান সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের টুমচর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

আরিয়ানের মা লিপি আক্তার জানান, আরিয়ানের মলত্যাগে সমস্যা হওয়ার কারণে সম্প্রতি তাকে সদর হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ইসমাইল হাছানকে দেখানো হয়। সেখানে আরিয়ানের সমস্যা দূর না হওয়ায় শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তাকে ডা. আউয়াল শিশু সার্জারি সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। ডা. জামাল সালেহ উদ্দিন আরজু তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পাইলসের অপারেশনের জন্য বলেন।

পরে সাড়ে ১২টার দিকে নার্স এসে আরিয়ানকে অপারেশন কক্ষে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তাকে অপারেশন কক্ষ থেকে বের করে নার্সরা বেডে এনে শোয়ায়। পরে নার্সরা জানায়, শিশুর জিহ্বার সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। এখন থেকে কথা বলতে পারবে। এ কথা শুনে শিশুর মা লিপি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়। পরে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, তার আরিয়ানের পাইলসের অপারেশন হওয়ার কথা ছিল। তার জিহবা কাটা হলো কেন? এরপরই বিষয়টি নিয়ে পুরো হাসপাতালে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আরিয়ানের বাবা নিজামউদ্দিন বলেন, আমরা থানায় অভিযোগ করবো। খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আবদুল ওদুদ এসে দু’পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেন। পরে তিনি ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ কবির বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। এজন্য তিনি আরিয়ানের অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।