ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে ফ্রান্স

আরও একটা জমজমাট মহারণ উপহার দিলো কাতার বিশ্বকাপ। শনিবার রাতে আসরের কোয়ার্টার ফাইনাল ধাপের শেষ ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। অধিনায়ক হ্যারি কেনের পেনাল্টি মিসের পর ফরাসিদের কাছে ২-১ গোলে হেরে বিদায় নিলো ইংলিশরা।

মহারণের শুরুতেই গোল উদযাপনে মেতে ওঠে ফ্রান্স

এই হারে শেষ হয়ে গেল থ্রি লায়নদের স্বপ্নযাত্রা। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় শিরোপার জন্য ইংলিশদের অন্তত আরও ৬০ বছর অপেক্ষা করতে হবে তাদের। সবশেষ ১৯৬৬ বিশ্বকাপে ট্রফি জিতেছিল ইংল্যান্ড। আরও একবার অপেক্ষার অবসান ঘটানোর স্বপ্ন ছিল তাদের। কিন্তু দুর্দান্ত খেলেও শেষ আট থেকে বিদায় নিতে হলো কেন অ্যান্ড কোংকে।

আল বায়েত স্টেডিয়ামে ইউরোপিয়ান মহারণ শুরু থেকেই উত্তাপ ছড়ায়। যাকে নিয়ে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি ভয় ছিল সেই কিলিয়ান এমবাপ্পে এদিন খেললেন নিচের ছায়া হয়ে। তবে আগুন ঝরালেন ইংলিশ তরুণ তুর্কি বুকায়ো সাকা। যা বিফলেই গেল। শেষ সময়ে গোল করে নায়ক বনে গেলেন অলিভার জিরার্ড।

স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় অস্রুসিক্ত ইংল্যান্ড দল

ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল আক্রমণের পসরা সাজায়। ১৭ মিনিটে লিড নেয় ফ্রান্স। আরিলিয়েন চৌমেনির দূরপাল্লার দুর্দান্ত এক শট আশ্রয় নেয় ইংল্যান্ডের জালে। দ্বিতীয়ার্ধে ৫৩ মিনিটে গোলটার শোধ দেয় ইংলিশরা। পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরান কেন। এই গোলেই ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা ওয়েন রুনির রেকর্ড ছুঁলেন তিনি। দুজনের গোল এখন সমান ৫৩টি।

চৌমেনির ভুলে পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ড। যেটার মাসুল পড়ে দিয়ে দিয়েছেন জিরার্ড। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে তার গোলের ওপর দাঁড়িয়ে ম্যাচে দ্বিতীয়বার এগিয়ে যায় ফরাসিরা। গ্রিজম্যানে ক্রসে মাথা ছুঁয়ে জিরার্ড খুঁজে নেন স্বপ্নের ঠিকানা। ফ্রান্সের জার্সিতে এটা তার ৫৩তম গোল। আগেই তিনি ছাড়িয়ে গেছেন দেশের ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা থিয়ের অঁরিকে।

কিন্তু লিড নেওয়ার একটু পরই ভুল করে বসেন থিও ফার্নান্দেজ। ডি-বক্সে ইংল্যান্ড ডিফেন্ডার ম্যাসন মাউন্টকে ফাউল করে বসেন তিনি। প্রায় একই ভুলটা করেছিলেন চৌমেনিও। কিন্তু হার্নান্দেজের ভুলের সুযোগটা আর কাজে লাগাতে পারেননি কেন। পেনাল্টি শট উড়িয়ে মারেন ইংলিশ অধিনায়ক।

তাতে এক অর্থে উড়ে গেল ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ের স্বপ্নটাও। হতাশায় ভেঙে পড়ে তারা। উৎসবে মেতে ওঠে ফ্রান্স। আগামী বুধবার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ফরাসিদের প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টের মহাবিস্ময় মরক্কো। যারা কিনা আগের ম্যাচে পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিরাট এক ইতিহাস গড়েছে।

ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের সামনেও আছে ইতিহাস গড়ার সুযোগ। তৃতীয় দল হিসেবে শিরোপা ধরে রাখার পথে ভালোভাবেই আছে তারা। সবশেষ ৬০ বছর আগে পরপর দুবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। তবে প্রথমবার এই কীর্তি গড়ে ইতালি। ফ্রান্স কি পারবে ব্রাজিল কিংবা ইতালি হয়ে উঠতে? উত্তরটা দূরে নয়।