নীরবতা ভাঙলেন সেই রদ্রিগো

কয়েক মাসের মধ্যে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবলের দুইরকম দুটি ছবি দেখা হয়ে গেল রদ্রিগোর। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের নিশ্চিত বিদায় ঠেকিয়েছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। ম্যাচের দ্বিতীয় লেগে দেড় মিনিটে দুই গোল করে বনে গিয়েছিলেন নায়ক।

রদ্রিগো

কিন্তু কাতারে জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসে রদ্রিগো হলেন খলনায়ক। ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলের পার্থক্যটা কোথায় সেটা হারে হারে বুঝতে পারলেন তিনি। গত শুক্রবার ব্রাজিলের বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়ে যাওয়ার পেছনে তার দায় আছে অনেকটা। শুরুতেই পেনাল্টি মিস করে বসেন তিনি। বিপদ বাড়ে ব্রাজিলের।

টাইব্রেকারে প্রথম শটেই লিড নেয় ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিল তখন সমতায় ফেরার মহাচাপে। খুব স্বাভাবিকভাবেই স্নায়ুচাপ পেয়ে বসল রদ্রিগোর মতো তরুণ ফুটবলারকে। তার শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ। রদ্রিগোর দল ব্রাজিলও পেনাল্টি শ্যুট আউটে ৪-২ গোলে হেরে বিদায় নিল বিশ্বকাপ থেকে। সেমিফাইনালে ওঠে ক্রোয়েশিয়া।

ব্রাজিলের এই হারটা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। বিশেষ করে অতিরিক্ত সময়ের খেলায় নেইমার জুনিয়রের গোলে যখন এগিয়ে গিয়েছিল সেলেকাওরা। কিন্তু ১১৭ মিনিটে পেচকোভিচের গোলে অবিশ্বাস্যভাবে সমতায় ফেরে ক্রোয়াটরা (১-১)। মনেবল ভেঙে যায় হলুদ শিবিরের। যার প্রভাব পড়ে টাইব্রেকারে। বাজিমাত করে ক্রোয়াটরা।

শিরোপা প্রত্যাশী ব্রাজিলের এই বিদায় অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। কিন্তু বাস্তবতা বড্ড কঠিন। যা শেষ পর্যন্ত মানতে হচ্ছে ব্রাজিলিয়ানদের। কাতারের এই হতাশা ভুলে আরও শক্তিশালী হয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে ফেরার প্রতিশ্রুতি দিলেন রদ্রিগো। শনিবার রাতে ইন্সটাগ্রামে এক পোস্টে তিনি ভাঙলেন নীরাবতা, জানালেন কঠিন সময়ের কথা।

রদ্রিগো বলেছেন, ‘আমি ক্ষমা চাইছি। কোনো সন্দেহ নেই যে, এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কষ্টের মুহূর্ত। কয়েক মিনিটের মধ্যে স্বর্গ থেকে নরকে চলে গেলাম। আমি জানি, কোনোকিছুই থেমে থাকবে না। এখন উঠে দাঁড়ানোর শক্তি না থাকলেও নিশ্চিত যে, আমি ঘুরে দাঁড়াব। সেটা কীভাবে তা জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি, আমি ফিরে আসব, অনেক শক্তিশালী হয়ে ফিরব।’

কীভাবে স্বপ্নটা ভেঙে চৌচির হয়ে গেল সেটা কোনোভাবেই বুঝে উঠতে পারেননি রদ্রিগো। তবে আশা রাখছেন পরের বিশ্বকাপকে ঘিরে। তার ভাষায়, ‘কেন এটা এভাবে শেষ হলো? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি চেষ্টা করব সামনের দিনগুলোতে সেরাটা দিয়ে যাওয়ার। আশা করছি ২০২৬ সালে সবকিছু ভিন্ন হবে। আমার বিশ্বাস এই প্রজন্মটা খুব ভালো। বিশ্বকাপ ট্রফি তাদের প্রাপ্য এবং তাদের এটা জেতা দরকার।’