নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি নেতারা: তছনছের অভিযোগ

অবশেষে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পেরেছেন বিএনপির নেতারা। বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স অভিযোগ করেছেন, কার্যালয়ের ভেতরে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র খোয়া গেছে।

নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকেন বিএনপি নেতা এমরান সালেহ প্রিন্স

চারদিনের মাথায় আজ রোববার দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বিএনপি নেতা প্রিন্স। কয়েকজন আইনজীবী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখেন তিনি।

এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, পুলিশ শুক্রবার ভবনের নিরাপত্তারক্ষীর কাছে কার্যালয়ের ফটকের চাবি বুঝিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কার্যালয়ে ঢোকার মতো পরিস্থিতি ছিল না। কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হয়নি।

আজ তারা ঢুকতে পেরেছেন জানিয়ে প্রিন্স বলেন, কার্যালয়ে ঢুকে ভেতরে তাণ্ডবের দৃশ্য দেখেছি। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এমন তাণ্ডব চালানোর জন্য সরকারই দায়ী।

প্রিন্স বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের কক্ষের দরজা ভেঙে ফেলা হয়েছে। কক্ষে যেসব জিনিসপত্র ছিল, সেগুলো কিছুই নেই। দলের ভাইস চেয়ারম্যানের কক্ষে থাকা কম্পিউটার মনিটর, সিপিইউ, ফাইলপত্র কিছুই নেই। হিসাব বিভাগে কম্পিউটার, সিপিইউসহ নেই, টাকা রাখার ড্রয়ার ভেঙে সব টাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চেকবইও খোয়া গেছে। ছাত্রদল, যুবদল, মহিলাদল ও কৃষক দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দপ্তরগুলোও তছনছ হয়ে গেছে, ফাইলপত্র নেই।

১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের কর্মসূচি ছিল বিএনপির। তার আগে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে একজন নিহত ও অনেকে আহত হন। বুধবার সংঘর্ষের পরই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।

অভিযান চালিয়ে পুলিশ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিএনপির চার শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে আদালতের মাধ্যমে ৪৩৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেদিন থেকেই কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবন্ধ ছিল।

রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে শনিবার বিএনপির গণসমাবেশ হয়। গণসমাবেশের একদিন পর আজ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হলো বিএনপি নেতাদের।

প্রিন্স অভিযোগ করেন, সরকার ও তার অনুগত প্রশাসন আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। না দেখলে বোঝা যাবে না, কী ধরনের তাণ্ডব হয়েছে এখানে।

এসব তছনছের নিন্দা জানিয়ে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, সরকার দেশকে যেমন লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও তারা তেমন তছনছ চালিয়েছে। চলমান আন্দোলনকে রুখতেই এই কাজ করেছে তারা।

গুরুত্বপূর্ণ নথি ও জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপের কথা জানান প্রিন্স। তিনি বলেন, খোয়া যাওয়া জিনিসের তালিকা করা হবে। এরপর দলীয় নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তছনছের অভিযোগ অস্বীকার করে পল্টন থানার ওসি সালাহউদ্দিন মিয়া বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জব্দ তালিকার বাইরে পুলিশ কিছুই আনেনি।