সিরাপে মৃত্যু: ভারতের ঘোষণায় হতবাক গাম্বিয়া

চলতি বছরের শুরুতে গাম্বিয়ায় ৬৯ জন শিশু ভারতীয় একটি ওষুধ কোম্পানির তৈরি সিরাপ খেয়ে কিডনি বিকল হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় গাম্বিয়া সরকার ওই ওষুধটির সরবরাহ, বিপণন বাতিল করে দেয়। কিন্তু ভারত সরকার সম্প্রতি জানিয়েছে, ওই ওষুধে মারাত্মক ক্ষতিকর ইথিলিন গ্লাইকল ও ডাই-ইথিলিন গ্লাইকলের অতিরিক্ত অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ভারতের এমন ঘোষণায়  হতবাক হয়েছে গাম্বিয়া। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ভারতের সেই সিরাপ

ভারতের ওই ওষুধ কোম্পানির নাম মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস। ভারতের ওই দাবিকে গাম্বিয়া বিশ্বাস করতে পারেনি। কারণ তারা মনে করে, ওষুধগুলো বাতিল করার পর ভারতীয় কোম্পানিটি যেহেতু কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি, সেহেতু কোথাও গলদ আছে।

গত ১৩ ডিসেম্বর ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল ভি জি সোমানি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে এক চিঠিতে জানিয়েছেন, মেডেন ফার্মার সিরাপ পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু ওই দুই বিষাক্ত উপাদানের অতিরিক্ত উপস্থিতি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গাম্বিয়ার ফিল্ড এপিডেমিওলজি ট্রেনিং প্রোগ্রামের আবাসিক উপদেষ্টা ডা. পিটার আদেবায়ো আদেউই এসব ঘটনাবলীর ওপর নজর রাখছেন। তিনি বলেন, ভারতের এই বক্তব্য অবিশ্বাস্য। ওষুধ বাতিল করার পর কোম্পানিটি কোনো প্রতিক্রিয়ায় দেয়নি, চুপ ছিল। তারা মামলাও করেনি। আর এখন বলা হচ্ছে কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই। এটা মানা যায় না।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘর তদন্তকারীরা উত্তর ভারতের ওই মেডেন ফার্মার তৈরি সিরাপে দুটি বিষাক্ত উপাদানের অতিরিক্ত উপস্থিতি খুঁজে পায়। এ উপাদান শিশুদের কিডনি ধীরে ধীরে বিকল করে দিতে পারে বলেও জানায় তদন্তকারীরা।

খবরে বলা হচ্ছে, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় ২ কোটি ৪০ লাখ লোকের বাস। দেশটিতে উল্লেখযোগ্য কোনো চিকিৎসা শিল্প নেই। সিরাপগুলো মেডেন ফার্মা থেকে আমদানি করা হয়েছিল। এই ওষুধটি আগেও মান নিয়ন্ত্রণের সমস্যায় পড়েছিল। কোম্পানিটি ভারতের বিহার রাজ্যে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিল এবং অন্যত্র নিম্নমানের পণ্য বিক্রির জন্য দণ্ডিত হয়েছিল।

মেডেন ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নরেশ কুমার গোয়েল রয়টার্সকে জানান, ভারতীয় নিয়ন্ত্রক ও বিচার প্রক্রিয়ায় আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা ভুল কিছু করিনি। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভারতীয় এই ওষুধের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী পরামর্শ জারি করেছে।