যে কারণে কিয়েভ যাচ্ছেন না বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিয়মিত ইউক্রেনের খোঁজখবর রাখছেন। গত সপ্তাহে তিনি ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। ইউক্রেন নিয়ে উদ্বেগ-আগ্রহ থাকলেও এ মূহূর্তে কিয়েভ সফরের কোনো পরিকল্পনা তার নেই। মূলতঃ নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তিনি কিয়েভ যাবেন না। হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন। খবর পলিটিকো।

এ মূহূর্তে জো বাইডেন কিয়েভ সফরের পরিকল্পনা করছেন না বলে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন

কর্মকর্তারা জানান, বাইডেন এক ধরনের উদ্বেগ নিয়েই ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরের ঘটনাপ্রবাহে নজর রাখছেন। একদিকে টানা ১০ মাস ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। অন্যদিকে মার্কিন কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা ইউক্রেনে অর্থায়নে কাটছাঁটের ঘোষণা দিচ্ছেন। নিদেনপক্ষে শীত পেরোনো পর্যন্ত যাতে ইউক্রেনে তহবিল জোগানো অব্যাহত রাখা যায়, সে বিষয়ে রিপাবলিকান পার্টির উদারপন্থী অংশটির সঙ্গে কাজ করছেন বাইডেন।

রিপাবলিকান পার্টির নেতা কেভিন ম্যাকার্থী প্রতিনিধি স্পিকার হতে চাচ্ছেন। এজন্য তিনি প্রয়োজনীয় সমর্থন সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। অক্টোবরে এক বক্তৃতায় ম্যাকার্থী বলেছেন, ইউক্রেন আর ওয়াশিংটনের কাছ থেকে কোনো ব্ল্যাংক চেক পাবে না। একইভাবে, জর্জিয়ার রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান মার্জোরি টেলর গ্রিন বলেছেন, রিপাবলিকানদের হাত দিয়ে আর একটা পয়সাও ইউক্রেনে যাবে না।

ইউক্রেনকে টিকিয়ে রাখতে কেবল অর্থ নয়, অস্ত্রও পাঠাতে হচ্ছে। রাশিয়ার মিসাইল ও ড্রোন হামলা ঠেকাতে প্যাট্রিয়ট মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম পাঠানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে পেন্টাগন। পাশাপাশি আন-গাইডেড গোলাবারুদকে স্মার্ট বোমায় রূপান্তরের কিট পাঠানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। জার্মানিতে ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রশিক্ষণ শুরুর বিষয়েও কথাবার্তা চলছে।

যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায় কেমন হতে যাচ্ছে সে বিষয়ে ওয়াশিংটন ও কিয়েভে উদ্বেগ বাড়ছে। গ্রীষ্মের শেষদিকে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ সফলতার মুখ দেখলেও দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় ফ্রন্টগুলোয় ইউক্রেনীয়দের গতি থমকে গেছে। রুশ বহিনী ওইসব অঞ্চলে শক্ত অবস্থান নিয়ে বসেছে। নতুন করে রুশ সৈন্য ও ট্যাঙ্ক বহরের গতিবিধি দেখে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান ভ্যালেরি জালুঝনি গত সপ্তাহে বলেছেন, আগামী সপ্তাহগুলোতে রাশিয়া আরেক দফা বড় ধরনের অভিযান চালাতে পারে, হয়তো তারা কিয়েভ পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে।

এতদিন পর্যন্ত ইউরোপীয় দেশগুলো একাট্টা হয়ে ইউক্রেনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে জ্বালানি সংকট ও অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা ইউরোপীয়দের ইচ্ছাশক্তিতে চিড় ধরাতে পারে। ইউক্রেন থেকে আরেক দফা শরণার্থীর ঢল শুরু হলেও ইউরোপীয় জনমত বিগড়ে যেতে পারে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পুরো এক মহাসাগর দূরত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে। ইউরোপের পরিস্থিতি কিন্তু অন্যরকম।