বৈশ্বিক বিকল্প জ্বালানির উৎস হয়ে উঠছে ‘তুর্কি বিশ্ব’

তুর্কি জনবহুল অঞ্চল মধ্য এশিয়া। কাজাখস্তান থেকে আজারবাইজান বিশ্ব ভূরাজনীতিতে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই অঞ্চল নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছে তুরস্ক। সম্প্রতি তুরস্ক, আজারবাইজান এবং তুর্কমেনিস্তানের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকে আঙ্কারা গ্যাস সমৃদ্ধ এশিয়া গড়ে তোলার একটি পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

প্রাকৃতিক গ্যাস

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব এখন জ্বালানি সংকটে ভুগছে। এই অবস্থায় গ্যাস সমৃদ্ধ মধ্য এশিয়া গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তুর্কি দেশগুলো চীন থেকে শুরু করে তুরস্কের সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত। সাবেক রাশিয়ান ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের একটি তীব্র প্রতিযোগিতামূলক অঞ্চল ছিল এই দেশগুলো, যা ‘গ্রেট গেম’ নামে পরিচিত ছিল।

মধ্য এশিয়ার দেশগুলো এখন তুরস্কের দিকে ঝুঁকছে। তারা একটি নতুন জোট গড়তে চায়। জোটটির নাম ‘অর্গানাইজেশন অব টার্কিক স্টেটস (ওটিএস)’। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই জোট পশ্চিমে জ্বালানি সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ অঞ্চলটি ইউক্রেনে যুদ্ধের প্রেক্ষিতে একটি সম্ভাব্য ‘গ্যাস হাব’ হয়ে উঠেছে।

বৈশ্বিক বিকল্প জ্বালানির উৎস হয়ে উঠছে ‘তুর্কি বিশ্ব’

সিইইএন এনার্জি ইনফরমেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড কনসালটেন্সির প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরে এরতুর্ক বলেন, রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাসের সরবরাহ খুবই নিচে নেমে এসেছে। ইউরোপকে নানা উৎস থেকে গ্যাস সংগ্রহ করার কথা ভাবতে হচ্ছে। এই অবস্থায় আজারবাইজান, তুর্কমেনিস্তান ও কাজাখস্তানের মতো দেশ থেকে তারা স্বল্পতম সময়ে গ্যাস পেতে পারে।

তুরস্কের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ার গ্যাস ইউরোপে পরিবহন করা একটি দীর্ঘ অমিমাংসিত প্রকল্প, যা ১৯০০ এর দশকে নেওয়া হয়েছিল। সেই প্রকল্পটি এখন আবার আলোর মুখ দেখতে চলেছে। সম্প্রতি তুর্কমেনিস্তানের আওয়াজা শহরে তুর্কমেন, তুরস্ক ও আজারবাইজানের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকই তার প্রমাণ দিচ্ছে। কারণ প্রকল্পটি এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবায়ন হতে চলেছে।

ওই বৈঠকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, পশ্চিমা বাজারে তুর্কমেন প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের সময় এসে গেছে। এক্ষেত্রে আমরা কাস্পিয়ান সাগরে তুর্কমেন ও আজারবাইজানীয় ভাইদের সাথে সহযোগিতার হাত বাড়াতে প্রস্তুত।