আধিপত্যবাদ ধরে রাখতে রুশোফোবিয়া!

রুশোফোবিয়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা হলেও খোদ রাশিয়াই রুশোফোবিয়া ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী রাশিয়ান আধিপত্যবাদ ধরে রাখতে চায় ক্রেমলিন। যদিও মস্কোরও অভিযোগ, রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে রুশোফোবিয়া ছড়ানো হচ্ছে। কিয়েভ পোস্টে 'দ্য রিয়েল আর্কিটেক্ট অব রুশোফোবিয়া' শীর্ষক নিবন্ধে এসব কথা তুলে ধরেছেন ইভানা স্ট্রেডনার।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

বলা হচ্ছে, পৃথিবীব্যাপী আধিপত্য বজায় রাখতে মস্কো নিজেই রুশোফোবিয়ার আশ্রয় নিচ্ছে। এর মাধ্যমে পৃথিবীর অন্য সব পরাশক্তিকে তারা অবজ্ঞা করছে। রুশ বিরোধী যেকোনো তৎপরতার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে নানা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তা দুর্বল করে দিতে রাশিয়া সর্বদা প্রচেষ্টা চালায়। রুশ বিরোধীদের দমনে এই টার্মটি ব্যবহার করছে মস্কো।

রাশিয়া শুধু তথ্য-উপাত্ত, উদ্বাস্তু, জ্বালানি ও খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে থেমে নেই। তারা পরিকল্পিতভাবে রুশোফোবিয়া ছড়িয়ে দিচ্ছে। তবে গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক বক্তৃতায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ পশ্চিমাদের নিন্দা করে বলেন, পশ্চিমা দেশে রুশোফোবিয়া নজিরবিহীন। এটি বিস্ময়কর নয়। বরং মস্কোর জন্য রুসোফোবিয়া একটি শক্তিশালী অস্ত্র, যা রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিরোধী আন্দোলনকে চূর্ণ করেছে, পশ্চিমকে বলির পাঁঠা বানিয়েছে এবং পশ্চিমা নৈতিক অনুভূতিতে আঘাত করেছে।

ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টও অভিযোগ করেছে, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করে রাশিয়া নিজেই রুশোফোবিয়া ছড়িয়ে দিতে চায়। প্রকৃতপক্ষে ইউক্রেনে রুশ হামলাকে বৈধ করতে পুতিন বর্ণবাদ ও রুশোফোবিয়া ব্যবহার করছে, যা ক্রেমলিনের পূর্বসূরিরাও একই কৌশল ব্যবহার করেছিল।

'রুশোফোবিয়া' শব্দটি ঊনবিংশ শতাব্দীতে আবির্ভুত হয়েছিল। ইউরোপে গণ-সামাজিক-রাজনৈতিক উত্থানের ওই সময়ে ক্রেমলিন একটি রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা বজায় রাখতে এবং রাশিয়ান সাম্রাজ্যকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে লড়াই করেছিল। এখন 'রুশোফোবিয়া' শব্দটি রুশ-বিরোধীদের যুক্তি দমন করার একটি হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

ইউক্রেনের যুদ্ধের সময় পুতিন আবার এই কৌশলটি ব্যবহার করছেন। তিনি বারবার দাবি করেছেন, ইউক্রেনীয় সরকার প্রকাশ্যে নব্য-নাৎসি, রাশিয়ান সাম্রাজ্যবাদী এই অভিযোগগুলো পশ্চিমের সাথে সুর মিলিয়েছে। এই যুক্তি দিয়ে ইউক্রেনে পশ্চিমের লক্ষ্য হল 'রাশিয়া-বিরোধী' আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা।