আপনি পড়ছেন

ফুটবলের দেশ আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ। খ্রিস্টান অধ্যুষিত দেশটিতে এখন ধীরে ধীরে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে তাদের স্থাপনার সংখ্যাও। একসময় কঠিন হলেও আর্জেন্টিনাতে এখন মুসলমানরা বেশ স্বাধীনভাবেই ধর্ম পালন করতে পারেন।

mosque of argentinaআর্জেন্টিনার বাদশাহ ফাহাদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টার

মাত্র এক সপ্তাহ আগে ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। ৩৬ বছর আগে ম্যারাডোনা যেভাবে আর্জেন্টিনাকে খুশির সাগরে ভাসিয়েছিলেন, লিওনেল মেসিও সেভাবেই দেশকে ভাসালেন আবেগে। প্রথম কোনো আরব ও মুসলিম দেশে আয়োজিত বিশ্বকাপ জিতে নেওয়া মেসির দেশ আর্জেন্টিনায় মুসলিমদের সংখ্যা কিন্তু নেহায়েত কম নয়।

সর্বশেষ গণনা অনুযায়ী আর্জেন্টিনার মোট জনসংখ্যা ৪ কোটি ৫৬ লাখ ২০ হাজার ৩৮১ জন। এদের মধ্যে মুসলিম নাগরিকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লাখ, আর্জেন্টিনার মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ। আর্জেন্টিনায় বসবাসকারীদের মাঝে মুসলিমরাই দেশটির বৃহত্তম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী।

after pray in argentinaআর্জেন্টিনার একটি মসজিদে মুসল্লিরা

সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসলমান বাস করে আর্জেন্টিনাতে। আর দেশটিতে বাস করা মুসলমানদের এক পঞ্চমাংশেরই বাস রাজধানী বুয়েনস আয়ারসে।

আর্জেন্টিনায় মুসলমানদের আগমন ইতিহাস লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের মতোই। একসময়ে স্প্যানিশ উপনিবেশের অধীনে ছিল মেসির দেশ। তখন বহু পশ্চিম আফ্রিকানকে দেশটিতে দাস হিসেবে নিয়ে আসা হতো। তাদের অধিকাংশ ছিল মরক্কোর মুসলিম বাসিন্দা। তাদের হাত ধরেই আর্জেন্টিনায় ইসলাম ধর্মের আগমন হয়।

ঊনবিংশ শতাব্দীতে মূলত উসমানী খেলাফতের পতনের পর প্রায় ১ লাখ মুসলিম আরব অভিবাসী আর্জেন্টিনায় আসেন। কিন্তু সেখানে তারা নির্যাতন-নিপীড়নের মুখে পড়েন। এসব নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই বাধ্য হয়ে খ্রিস্টান হয়ে যান। অনেকে পরিচয় গোপন করে নিজেদের খ্রিস্টান বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন।

তবে ১৯৮৯ সালে কার্লোস মেনেম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলে আর্জেন্টিনার ইতিহাস পাল্টাতে শুরু করে। আর্জেন্টিনার প্রথম আরব বংশোদ্ভূত প্রেসিডেন্ট কার্লোস মেনেম জন্মসূত্রে মুসলিম হলেও, ক্ষমতায় আসার জন্য তিনি খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর দেশটির মুসলিম নাগরিকদের নানাভাবে সহায়তা করতে শুরু করেন। বিশেষত সৌদি সরকারের সহায়তায় তিনি দেশে বিভিন্ন মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার নির্মাণ করেন।

তার প্রচেষ্টাতেই ইসলামি নববর্ষের প্রথম দিন উদযাপনের জন্য ছুটি নেওয়ার অনুমতি মেলে। এখন আর্জেন্টিনার মুসলমানরা বেশ স্বাধীনভাবেই ধর্ম পালন করতে পারেন। পবিত্র রমযান, ঈদসহ সব ইসলামি উৎসব তারা বেশ আনন্দ-উদ্দীপনার সঙ্গেই পালন করে থাকেন।

বর্তমানে আর্জেন্টিনার বিভিন্ন শহরে দেড় শতাধিক ইসলামিক সেন্টার রয়েছে। বর্তমানে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই সেন্টার গুলোর সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। ইবাদতের সুবিধার্থে আর্জেন্টিনার বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠেছে বড় বড় ইসলামিক সেন্টার, মসজিদ। এগুলোর মধ্যে সিআইআরএ (দ্য ইসলামিক সেন্টার অব আর্জেন্টিনা), আহমদ মসজিদ, আত-তাওহিদ মসজিদ, কিং ফাহাদ বা পালার্মো মসজিদ অন্যতম।

আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসে নির্মাণ করা হয়েছে বাদশাহ ফাহাদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টার, যেটি পুরো লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় মসজিদ। এটি ইসলামি শিক্ষা ও প্রচারকেন্দ্র হিসেবেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলছে।

জানা গেছে, প্রথমে এ সেন্টারটির মূল আয়তন ছিল ২০ হাজার স্কয়ার মিটার। ১৯৯২ সালে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট কার্লোস মেনেম সৌদি সফরের পর ওই মসজিদের জন্য জায়গার বরাদ্দ বেড়ে যায়। অত্যাধুনিক এ মসজিদ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয় ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ মসজিদের আওতায় রয়েছে লাইব্রেরি, দুটি স্কুল ও বিশাল গার্ডেন।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.