যুক্তরাজ্যের ভূমিকায় ক্ষেপেছে ইরান

ইরানের চলমান বিক্ষোভে এ পর্যন্ত বহু গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তারের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইরানের নিন্দা জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি দেশ ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে। ইরান অভিযোগ করেছে, বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার নিয়ে যুক্তরাজ্য ধ্বংসাত্মক ভূমিকায় লিপ্ত হয়েছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি গতকাল সোমবার বলেছেন, বিক্ষোভে উসকানি দেওয়ায় ব্রিটেনের সাত নাগরিককে গ্রেপ্তারের পর যুক্তরাজ্য ইরানের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক ভূমিকায় লিপ্ত হয়েছে। কিছু দেশ বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ইরানের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে অগঠনমূলক ভূমিকা রেখেছে। তেহরানে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাতে তিনি এসব কথা বলেন।

ইরানের রেভ্যুলিউশনারি গার্ডস (আইজিআরসি) জানিয়েছে, দ্বৈত নাগরিক সাতজন সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের ইরানের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বও রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের পর ইরানে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা বিতর্কিত।

আইআরএনএ বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য ইরানে ‘গোপন নেটওয়ার্ক’ গড়ে তুলে বিক্ষোভকারীদের উসকানিতে লিপ্ত রয়েছে। দেশটি ইরানের বিক্ষোভের মধ্যে ষড়যন্ত্র ও নাশকতামূলক কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কেরমান প্রদেশে গ্রেপ্তার হওয়া ওই সাত নাগরিক দাঙ্গায় নেতৃত্ব দিচ্ছিল। তারা ইরান-বিরোধী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে লিপ্ত ছিল।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ব্রিটিশ-ইরানি দ্বৈত নাগরিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমন ঘটনায় ইরানি কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা কৈফিয়ত চেয়েছি। তবে কানানি বলছেন, গ্রেপ্তার নাগরিকদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যকে সহায়তা করেছে ইরান। কিন্তু দেশটি আরও তথ্য চাইছে যা ইরান সরবরাহ করতে পারে না। তারা কী অপরাধ করেছে তাও জানানো হয়েছে।

কানানি বলেন, আমরা গ্রেপ্তারকৃতদের প্রতি মানবিক আচরণ করছি। তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগের অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে। চলমান বিক্ষোভে বিদেশি শত্রুরা জড়িত এবং তারা তাদের এজেন্টদের লেলিয়ে দিচ্ছে। এ কারণে বিক্ষোভ বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে। ২০১৯ সালের পর এখন ইরান সবচেয়ে অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

খবরে বলা হচ্ছে, এ পর্যন্ত ইরানে ১৮ হাজার ৫১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬৯ জন শিশু রয়েছে। এই পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তেহরানের নিন্দা অব্যাহত রেখেছে এবং দেশটিকে বিচ্ছিন্ন করার পদক্ষেপ নিয়েছে। অধিকার গোষ্ঠী এইচআরএএনএ জানিয়েছে, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ৫০৭ জন নিহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৬ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি পুলিশ হেফাজতে মারা যান। এরপর ইরানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রথমে বিক্ষোভটি হিজাববিরোধী ছিল কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে এটি সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।