শাহবাজ সরকারের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে টিটিপি

তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি পাকিস্তানে এক আলোচিত-সমালোচিত নাম। ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পরই কোণঠাসা টিটিপি মাথাচাড়া দেয়। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সাথে চুক্তি করে তাদের দমিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু সেই অবস্থা বেশিদিন থাকতে পারেনি। ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। শাহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই টিটিপি ফের চোখ রাঙাতে শুরু করেছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

শাহবাজ শরিফ

ইনস্টিটিউট অব স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদের (আইএসএসআই) পরিচালক আমিনা খান বলেন, টিটিপি সারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। তারা বাম, ডান ও কেন্দ্র থেকে হামলা শুরু করেছে। এরপরও সরকারের কোনো সমন্বিত পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। নেতারা বুঝতেই পারছে না টিটিপির বিরুদ্ধে কিভাবে লড়বে।

খবরে বলা হচ্ছে, গত বছর থেকে উত্তর ওয়াজিরিস্তান, বাজাউর এবং বান্নুর মতো শহরগুলোতে এখন সশস্ত্র টিটিপি সদস্যদের আনাগোনা। টিটিপি যোদ্ধাদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির ব্যাপারে বাসিন্দাদের অভিযাগ, তারা চেকপোস্ট স্থাপনের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি শুরু করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানে বিজয় লাভ করলে প্রাণে পানি ফিরে পায় টিটিপি। ইসলামাবাদকে আলোচনার টেবিলে বসিয়ে তাদের শর্তাবলী মেনে নিতে বাধ্য করে। এখন তারা পুরো পাকিস্তানজুড়ে কার্যকলাপ বৃদ্ধি করেছে।

টিটিপির অন্যতম প্রধান দাবি হলো, তারা আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী উপজাতীয় অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসিত মর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে চায়। একসময় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের শীর্ষ শক্তি হয়ে ওঠে টিটিপি। ওই সময় আফগানিস্তানের তালেবান নেতারা টিটিপির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে। টিটিপি এখন চাচ্ছে, খাইবার থেকে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী সরে যাক।

পাক ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজ (পিআইপিএস) অনুসারে, কাবুলে তালেবান ক্ষমতায় আসার ১২ মাসে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এসব হামলায় ৪৩৩ জন নিহত হয়েছে। টিটিপি যোদ্ধারা আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর রেখে যাওয়া থার্মাল ইমেজিং ডিভাইসসহ অধ্যাধুনিক অস্ত্রও হাতে পেয়েছে।

খবরে বলা হয়, টিটিপিকে পাকিস্তানি তালেবান বলা হলেও আফগানিস্তানের তালেবান ও টিটিপি আলাদা সাংগঠনিক শক্তি লালন করে। তবে উভয়ের আদর্শগত মিল রয়েছে। তারা বছরের পর বছর একে অপরকে সমর্থন করছে। এখন টিটিপি শাহবাজ সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।