দেউলিয়া হব না, বলছে পাকিস্তান

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, পাকিস্তান কোনো অবস্থাতেই দেউলিয়া হবে না। বরং পাকিস্তানের রয়েছে সুন্দর ভবিষ্যত ও তেজি অর্থনীতি। পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জে (পিএসএক্স) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের আশস্ত করে তিনি সোমবার এসব কথা বলেন। পাকিস্তানি দৈনিক ডন আজ বুধবার দুপুরে খবরটি প্রকাশ করেছে।

ইসলামাবাদে চীনা রাষ্ট্রদূত নং রংয়ের সঙ্গে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার

ইসহাক দার রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্টের (আরইআইটি) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন। আরইআইটি হচ্ছে এক ধরনের বিনিয়োগ স্কিম, যার মাধ্যমে স্বল্প পুঁজির মালিকদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগ করা হয়। এতে করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা রিয়েল এস্টেটের মতো পুঁজিঘন ও বড় বিনিয়োগের খাতে ব্যবসা করতে পারেন।

অনুষ্ঠানে ইসহাক দার বলেন, আমরা প্রতিদিনই শুনি পাকিস্তান দেউলিয়া হবে। কিন্তু কিভাবে দেউলিয়া হবে? দেউলিয়া হবার কোনো সুযোগই তো নেই। এটা সত্য যে আমাদের আর্থিক সংকট চলছে। ২০১৬ সালে মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) সরকার ক্ষমতা ছাড়ার সময় যে ২৪ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল, সেটা এখন নেই। তবে এটা আমার ব্যর্থতা না। এটা সিস্টেমের ত্রুটি। এখন সবাই যাতে পাকিস্তানের উন্নতির জন্য একসঙ্গে কাজ করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের পক্ষে উন্নতি করা সম্ভব। আমি থাকি বা না থাকি, পাকিস্তান উন্নতি করবে। এর আগে বলা হচ্ছিল, পাকিস্তান ১ বিলিয়ন ডলার বন্ডের দাম পরিশোধ করতে পারবে না। কিন্তু যখন সেটা পরিশোধ হলো, তখন এই ছদ্ম-বুদ্ধিজীবীরা নতুন নতুন কথা বলছেন।

বিনিয়োগকারীদের প্রতি নেতিবাচক কথায় কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি যে কোনো জায়গায় যে কারো সঙ্গে আলোচনায় যেতে পারি এবং প্রমাণ করতে পারি যে পাকিস্তান দেউলিয়া হবে না। অথচ আমরা সংকীর্ণ রাজনীতি ও ক্ষীণ স্বার্থের কারণে দেশের ক্ষতি করছি।

ইসহাক দার বলেন, পাকিস্তানের ঋণ-ডিজিপি অনুপাত ৭৪ শতাংশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ১১০ শতাংশ ও ব্রিটেনের ১০১ শতাংশ। আমি অন্তত এক ডজন পশ্চিমা দেশের কথা বলতে পারি যাদের ঋণ-ডিজিপি অনুপাত শতভাগের বেশি। কিন্তু সেখানে কেউ বলছে না যে দেশ সংকটে আছে অথবা আমরা ঋণের ফাঁদে পড়েছি।

তিনি বলেন, আমরা নিজেরাই নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু। এই ঘৃণ্য প্রচারণার মোকাবেলা করতে হবে। মানুষ এসব প্রচারণার কারণে ভয় পাচ্ছে এবং আতঙ্কিত হয়ে স্বর্ণ ও ডলার কিনছে। আমাদের অর্থনীতির গুরুতর সমস্যা আছে। কিন্তু বিষয়টি এমন নয় যে এই ঝড় আমরা মোকাবেলা করতে পারব না।

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী বলেন, আন্তঃব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলার-রুপি বিনিময় হারের পার্থক্যের প্রাথমিক কারণগুলো হলো- ডলার পাচার হতে থাকা, গম আমদানি ও গমের পেছনে আংশিক ভর্তুকি দেওয়া, সার আমদানি ও সারে ব্যাপক ভর্তুকি দেওয়া এবং এই আমদানিকৃত গম ও সার অন্য দেশে পাচার হয়ে যাওয়া।

তিনি বলেন, আমি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ডলার, গম ও সার পাচার রোধে পদক্ষেপ নিতে বলেছি। দেশের সুরক্ষায় তারা যেভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে, অর্থনীতি বাঁচাতেও একইরকম পদক্ষেপ নিতে হবে। আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।